বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে নিউটাউনে সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের যে আবাসনে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ফুটেজে একজন ব্যক্তিকে একটি সবুজ ট্রলি হাতে দেখা যায়। আর এই ট্রলিতেই এমপি আনারেরে লাশের টুকরোগুলো ভরে নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রকাশ্যে আসা ১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বামদিকের একটি ঘর থেকে ট্রলি নিয়ে বের হচ্ছেন এক অভিযুক্ত। ডানদিকে লিফটের বোতাম টিপে অপেক্ষা করেন তিনি। সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। তার হাতে আরও তিনটি ছোট ছোট ব্যাগ ছিল। লিফট এলে তাতে ট্রলি নিয়ে উঠে পড়েন দু’জনই।
ওই ফুটেজেই অন্য একটি দৃশ্যে দেখা গিয়েছে, তিনজন বাম দিকের ঘরটিতে ঢুকছেন। ঘরে ঢোকার আগে জুতো খুলে রেখে দিচ্ছেন দরজার পাশের জুতো রাখার তাকে। এই ফুটেজে খুনের অন্যতম অভিযুক্ত আমানুল্লাহকে দেখা গিয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ ইতোমধ্যে তাকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও ফুটেজে দেখা গিয়েছে ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদারকে। মুম্বাই থেকে তাকে ডেকে এনেছিলেন অভিযুক্তরা। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তাকে বনগাঁ থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
শুক্রবার (২৪ মে) সকালে জিহাদকে বারাসত আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। উঠেছিলেন বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে। দুইদিন পর সেখান থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।
সিআইডি জানতে পেরেছে, হানি ট্র্যাপের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এক মহিলার ফাঁদে ফেলে তাকে নিউটাউনের আবাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই তাকে খুন করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, তিনি বাকিদের সঙ্গে মিলে খুনের পর সংসদ সদস্যের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন। তারপর ছাল ছাড়িয়ে হলুদ মাখানো হয় তাতে। পরে সেগুলো বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
নিউটাউনের ওই আবাসনে পাওয়া গেছে রক্তের দাগ এবং গ্লাভসের খালি প্যাকেট। প্রমাণ না রাখতেই গ্লাভস ব্যবহার করা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ পুলিশ ইতোমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
ভারতীয় সিআইডির একটি দল গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে বৃহস্পতিবারই (২৩ মে) বাংলাদেশে পৌঁছায়।