রাশিয়ার সাথে সংঘাতে ইউক্রেন হেরে গেলে ‘‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’’ শুরু হয়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা একটি বিদেশি সহায়তা বিল পাসের আহ্বান জানিয়ে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের এই প্রধানমন্ত্রী বিলটি পাসের বিষয়ে আশাপ্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা কিয়েভের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজটির অনুমোদন দেবেন। আগামী শনিবার মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে এই বিলের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরায়েলের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক সহায়তার বিষয়টিও ওই বিলে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী শ্যামিহাল যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তার বিষয়ে বলেন, ‘‘এই অর্থ আমাদের গতকালই দরকার ছিল, আজ কিংবা আগামীকাল নয়।’’
তিনি বলেন, আমরা যদি এটা না পাই… তাহলে ইউক্রেনের পতন ঘটবে। আর তখন বিশ্ব, বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে…। আর এটা ঘটলে পুরো বিশ্বকে নিরাপত্তার একটি নতুন ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে।’’
‘‘অথবা বিশ্বজুড়ে অনেক সংঘাত দেখা দেবে। এই ধরনের অনেক যুদ্ধ বাধবে। দিনের শেষে এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে গড়াবে।’’
রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে সম্ভাব্য পরাজয় নিয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম যে এভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। কারণ এর আগে গত বছর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, সংঘাতে রাশিয়া যদি জিতে যায়, তাহলে তারা পরবর্তীতে পোল্যান্ডে আক্রমণ করবে; যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করবে।
তবে পশ্চিমাদের এই ধরনের যুদ্ধভীতির দাবিকে নিয়ে উপহাস করেছেন ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা। গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া পূর্ব ইউরোপে একদিন হামলা চালাতে পারে পশ্চিমাদের এমন আশঙ্কাকে ‘‘পুরোপুরি বাজে কথা’’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ভেতরে কোনও দেশে রাশিয়া কখনই হামলা চালায়নি। ন্যাটোর সামষ্টিক প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী, কোনও সদস্য দেশের ওপর হামলা হলে তা জোটের সব সদস্যের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বুধবারের সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শ্যামিহালকে রিপাবলিকান হাউসের পররাষ্ট্রবিষয়ক চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককালের নিজ দলের সদস্যরা রাশিয়ার প্রচারণায় ‘‘সংক্রমিত’’ হচ্ছেন’, সাম্প্রতিক এমন এক দাবির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বোঝা উচিত যে, মিথ্যা তথ্য এবং অপপ্রচার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক মানুষের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক লোকজনের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে ইউক্রেনেও ছড়ানো হচ্ছে।’’