নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবুল হাসেম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহেনশাহ আজাদসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম।
আবুল হাসেম ও শাহান শাহ আজাদ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- চেয়ারম্যান আবুল হাসেরম ছেলে হাসীব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম, উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন।
এদিকে আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
পরে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম আটজনকে আটকের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আগুনের সূত্রপাত, কেন আগুন এত ভয়াবহ হলো, কেন এত শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটেছে, কেনই বা আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হতে পারেননি। এটি দুর্ঘটনা, নাকি নাশকতা সবই তদন্ত করে উদঘাটন করা হবে।’ এরপরই হত্যা মামলায় আটকদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সেজান গ্রুপের ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। আগুনে বৃহস্পতিবার দুজনের মৃত্যু হয়। একজনের মৃত্যু হয় ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে। গতকাল শুক্রবার উদ্ধার করা হয় আরও ৪৯ লাশ। তাদের নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।
উদ্ধারের পর ৪৯টি মরদেহ নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পুড়ে অঙ্গার হওয়ায় চেনার মতো অবস্থা না থাকায় পরিচয় শনাক্তের জন্য নিহতদের স্বজনদের ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরিচয় শনাক্তের পরই মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে বুঝে দেয়া হবে।