সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের বেশকিছু সুপারিশে দ্বিমত পোষণ করেছে নির্বাচন কমিশন, এ বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন —এমন প্রশ্নের জবাবে সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। এই সুপারিশ নিয়ে সরকার কাজ করছে। এই সুপারিশগুলোর মধ্যে আমরা কিছু আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ চিহ্নিত করেছি এবং কিছু সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে সরকার। সুপারিশগুলো আলাপ-আলোচনা ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আমাদের সুপারিশ পেশ করেছি। এটা জাতির সামনে উন্মুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাদের মতামত দিয়েছে। তারা ঐক্যমত কমিশনের কাছে চিঠি লিখেছে। আমরা এগুলো বিবেচনায় নিচ্ছি।
এখনো রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে অনেক বিষয়ে একমত হতে পারেনি, আবার নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে দললেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মতামত; আপনি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে এ বিষয়গুলো কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনগুলোর সঙ্গে একমত, কোনগুলোর সঙ্গে দ্বিমত। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব প্রস্তাবে ঐক্যমতে পৌঁছাবে তা বাস্তবায়ন হবে। যেগুলোতে পৌঁছাবে না, সেগুলো বাস্তবায়ন হবে না। আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি কোনগুলোর সঙ্গে তারা একমত, কোনগুলোর সঙ্গে দ্বিমত এবং কোনগুলোতে আংশিকভাবে একমত। আর যেগুলোর সঙ্গে তারা দ্বিমত ও আংশিকভাবে একমত সেগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি এবং বুঝার চেষ্টা করছি তাদের মধ্যে মতামতের কোনো পরিবর্তন আছে কি-না। আলাপ-আলোচনা মাধ্যমে চিহ্নিত হবে কোনগুলোতে তারা ঐক্যমত আছে আর কোনগুলোতে নাই।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্ত শিথিল করার বিষয়টি কতটুকু যৌক্তিক বলে আপনে মনে করেন —এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো বহুদিন থেকে বলে আসছে যে শর্তগুলো আছে তা কঠোর আর এগুলো বাস্তবায়ন করতে যে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় তা রাজনৈতিক দলের জন্য সহজ না। আমরা এ প্রস্তাব ছাড়াও আরও অনেকগুলো প্রস্তাব শিথিল করেছি। তাও অনেকে আরও দাবি করছে এগুলো যেন আরও শিথিল করা হয়।
নির্বাচনে অংশগ্রহণে বয়সের বিষয়টি শিথিল করে যে প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রদের নির্বাচনে সুবিধা দেওয়ার জন্য এটা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে আপনার মতামত কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কোনো ভূমিকা আছ। কারণ, এ সরকার কোনো কিছুতেই কিছু চাপিয়ে দেয় নাই। সংস্কার কমিশনগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করেছে তারা অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এবং নিজেদের বিচার-বিবেচনায় কাজগুলো করেছে। অনেক দেশে ১৬ বছরে ভোট প্রদান করার বিধান রয়েছে। তো এ রকম একটা প্রস্তাব হতেই পারে। এটাতে রাজনৈতিক দলগুলো যদি একমত না হয় তাহলে এটা বাস্তবায়ন হবে না। এটা কাউকে সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়নি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়া জরুরি বলে আপনে কি মনে করেন —এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সুপারিশ দিয়েছে এবং সুপারিশের বিপরীতে আমাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছি। এখন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের, আমাদের না।
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত, এটা আমাদের বিষয় না। এই ব্যাপারে আমাদের যা বক্তব্য আমারা তা আমাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। আমাদের প্রতিবেদনে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা বা না করা —এমন কোনো সুপারিশ করিনি।