অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে দলটি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সংলাপ শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে ইসি পুনর্গঠন করা উচিত। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টাকে বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।
সংলাপে আলোচনার বিষয় তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘প্রশাসনে যারা আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচারের দোসর রয়েছে তাদের অনতিবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে। আমরা বলেছি, জেলা প্রশাসনে যারা অভিযুক্ত ও নিয়োগপ্রাপ্ত সেগুলোর নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক কিছু নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে দু-একজন আছেন যারা এই বিপ্লবের স্পৃহাকে থামাতে চান, তাদের সরানোর বিষয়ে কথা বলেছি।’
ফখরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগ বিশেষ করে হাইকোর্ট যারা নিয়োগ পেয়েছে, সব দলীয় বিবেচনায়- এদের ব্যাপারে কথা বলেছি। দলকানা বিচারকদের অপসারণের কথা বলেছি, নতুন করে পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) নিয়োগ করার কথা বলেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে সে নানা মিথ্যা গুজব ক্যাম্পেইন করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে ভারত সরকারের সাথে কথা বলতে বলেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কথা বলবে বলে জানিয়েছে। পাহাড়ে কারা অশান্তি করার পাঁয়তারা করছে, তাদের নজরে আনার কথা বলেছি। তাদের গ্রেফতার করা হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএনপির প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন।
মির্জা ফখরুল ছাড়াও প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে গত ৮ আগস্ট অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেন। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে প্রধান উপদেষ্টার এটি তৃতীয় দফা সংলাপ। সবশেষ গত ৩১ আগস্ট সংলাপ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মতবিনিময় করেন অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বিএনপির পর অংশ নেয় জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।