সংলাপের নামে বঙ্গভবনে নতুন নাটকের মঞ্চায়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। সোমবার এক আলোচনা সভায় তারা বলেন, সার্চ কমিটির নামে নির্বাচন কমিশন গঠনে তামাশা শুরু হয়েছে। এ তামাশা ও প্রতারণায় যারা থাকবে তারা দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু। সংলাপে গিয়ে যে সময় নষ্ট হবে সেটা সরকার তাড়ানোর কাজে লাগাতে হবে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হলো আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি সেদিন তার দুই শিশুর হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি ক্যান্টমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন। আজ তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন এই ৫০ বছরে এরা (সরকার) দাবি করে যে, বাংলাদেশে উন্নয়নের নাকি বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই ৫০ বছরে আজকে গরিব আরও গরিব হয়েছে। এখানে কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদদপুষ্ট লোক আরও ধনী হয়েছে। আজকে দেশের কৃষকরা পণ্যের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকরা তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরি পাচ্ছে না। আমাদের সব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি সত্যিকার অর্থে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের সামনে সময় নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব রাজনৈতিক শক্তি, ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে ভয়াবহ দানবীয় যে শক্তি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে তাদের পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের একটি সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। সম্প্রতি সাবেক হওয়া প্রতিমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে কোথাও জায়গা পাননি। তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। এসব কাদের জন্য হচ্ছে? আজকে জোর করে যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের জন্য এই অবস্থা। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য এই অবস্থা।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন করার জন্য সরকার আবার একটি নাটক শুরু করেছে। (সোমবার) নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হলো। তারা নাকি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি করবে। এগুলো তামাশা। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে গিয়ে যে সময়টা নষ্ট করব, সেই সময়টা সরকার তাড়ানোর কাজে লাগাতে হবে। এসব তামাশায় অংশগ্রহণের প্রশ্নই ওঠে না। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে তামাশা শুরু হয়েছে। এ তামাশা ও প্রতারণায় যারা থাকবে তারা হচ্ছে বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের শত্রু।