রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া মারা গেছেন। রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে রিকশায় করে ব্যক্তিগত কাজে প্রেস ক্লাবে যাচ্ছিলেন রফিক ভূঁইয়া। পথে সেগুনবাগিচা এলাকায় পুলিশের টিয়ারগ্যাসের কবলে পড়ে রিকশা উল্টে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, রফিক ভূঁইয়ার মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তার ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়েছে।
প্রবীণ এই সাংবাদিকের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঁইয়ায়। তিনি চট্টগ্রাম থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর ঢাকায় এসেও বিভিন্ন সংবাদপত্রে কাজ করেছেন। নিজেও একাধিক সংবাদপত্র প্রকাশ করেছেন। দীর্ঘদিন কানাডা প্রবাসী থাকাকালে সেখানেও সংবাদপত্র প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামে থাকাকালে রফিক ভূঁইয়া ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ডিইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী ও সিনিয়র সদস্য ছিলেন। রফিক ভূঁইয়ার মৃত্যুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও নেতারা শোক জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশ ছিল বিএনপির। কিন্তু সমাবেশ শুরুর আগেই দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষটি বিস্তৃত হয়ে বিএনপির সমাবেশের কাছে চলে আসে এবং একপর্যায়ে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরে নয়াপল্টনের মঞ্চ থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ভয়াবহ এই সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য ও এক রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। পুলিশের হিসাবে, ৫৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।