কোটা পূরণ না হওয়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ষষ্ঠবারের মতো বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত হজের নিবন্ধন চলবে। সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
আগের নির্বারিত সময় অনুযায়ী হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আজ সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। সৌদি আরবে সেবামূল্য কমানোর কারণে চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজ পালনে খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোও হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৭ হাজার ৩৪৭ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৮৯২ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৭ হাজার ৪৫৫ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। এখনো কোটা পূরণে ৯ হাজার ৮৫১ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।
সময় বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত হজযাত্রীদের বিশেষ অনুরোধে বর্ধিত করা হলো।
নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে এবং উভয় ব্যবস্থাপনায় নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করে হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এবার হজের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হজের নিবন্ধনে ভাটা পড়েছে। এর আগে পাঁচ দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করা যায়নি।
চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষে নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
সর্বশেষ হজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর সঙ্গে নিবন্ধনের সময় ২৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেও সাড়া মেলেনি হজযাত্রীদের।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।
গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
খরচ কমানোর সময় ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেহেতু মিনার তাঁবু ‘সি’ ক্যাটাগরি ধরে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেহেতু সরকারি প্যাকেজ মূল্য ৪১৩ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্তমান হজ প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে (৬,৮৩,০১৫- ১১,৭২৫) ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।
হজ এজেন্সিজগুলোও মিনার তাঁবু ‘সি’ ক্যাটাগরি ধরে প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে, তাই বেসরকারিভাবে হজ পালনে প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে (৬,৭২,৬১৮-১১,৭২৫) ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯০ টাকা নির্ধারিত হবে বলে জানিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।