উপুল থারাঙ্গা খেলোয়াড়ি জীবনেও বাংলাদেশের ত্রাস ছিলেন। সে ধারাটায় ছেদ পড়েনি অবসরের পরেও। বাংলাদেশ লিজেন্ডসের বিপক্ষে শতকের দেখা না পেলেও ঠিকই রানের পাহাড় চাপিয়ে দিয়েছেন। তাতে মোহাম্মদ রফিকের দল ৪২ রানে হেরেছে, পেয়েছে টানা তিন হারের বিস্বাদ।
ভারতের রায়পুরে রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের ম্যাচে বুধবার রাতে শুরুটা ভালো করেছিলেন বাংলাদেশি বোলাররা। তিলকরত্নে দিলশান ও সনাৎ জয়াসুরিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে ব্যর্থ হলেও প্রথম ৫ ওভারে তুলতে দেন মাত্র ২৯ রান। মূল কৃতিত্বটা ছিল মোহাম্মদ শরিফের। পাওয়ারপ্লেতে তার করা দুই ওভারে দিলশান-জয়াসুরিয়া তুলতে পারেন কেবল ৯ রান।
তবে এরপরই যেন রানের চাকা সচল হয় লঙ্কানদের। রান বাড়ানোর তাড়ায় প্রথম উইকেটও হারায় দলটি। রাজিন সালেহর বলে দুই চার হাঁকানোর পর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন দিলশান। এরপর জয়াসুরিয়া বিদায় নেন পায়ের পেশিতে টান লাগায়। এরপরই শুরু থারাঙ্গা আর চামারা সিলভার তাণ্ডবের।
শুরুতে নড়বড়ে থারাঙ্গা ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন জাভেদ ওমরের হাতে। তবে সেটা তালুবন্দি রাখতে পারেননি সাবেক বাংলাদেশি ওপেনার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি থারাঙ্গাকে। আবদুর রাজ্জাক ও মোহাম্মদ রফিকের বলে শান্ত থাকলেও বাকিদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান। আলমগীর কবিরের এক ওভারেও ২০ রান তোলার পর মুশফিকুর রহমান বাবুকে হাঁকান এক চার ও দুই ছয়। তাতে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি শতকের খুব কাছে চলে যান তিনি। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রান। তবে দ্বিতীয় রানের চেষ্টাটা সফল হয়নি তার, ফলে ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
জবাবে নাজিমুদ্দিন ও মেহরাব অপির ব্যাটে পাওয়ারপ্লেতে পাওয়া ৫৪ রানে দারুণ চোখরাঙানি দিচ্ছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতে অপির কভার ড্রাইভে মারা ছক্কা যেন ফিরিয়ে আনছিল তার স্বর্ণসময়কেই। সঙ্গী নাজিমুদ্দিনও শুরু করেছিলেন দারুণভাবেই। তবে দিলশানের বলে অপি ফিরতেই যেন রানের গতি যায় আটকে। একপাশে হান্নান সরকার, মোহাম্মদ রফিকদের আউট হতে দেখা নাজিমুদ্দিন ৩৪ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। প্রথম ম্যাচে দারুণ ব্যাট করেও ১ রানের জন্য ৫০ এর দেখা পাননি তিনি।
এরপর খালেদ মাসুদ ২২ বলে ২৮ রান তুললে রানের ব্যবধানটা কিছুটা কমে বাংলাদেশের। তবে চ্যালেঞ্জটা আর কখনোই জানাতে পারেনি রফিকের দল। ম্যাচটা হারে ৪২ রানে। এর আগে ভারত ও ইংল্যান্ডের কাছে হারা বাংলাদেশ এ নিয়ে হারল তৃতীয় ম্যাচে। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন রফিকরা। এরপর সোমবার শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা লিজেন্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস: ১৮০/৬ (দিলশান ৩৩, উপুল থারাঙ্গা ৯৯*, সিলভা ২৪; শরীফ ৩০-১, রফিক ২৪-১)
বাংলাদেশ লেজেন্ডস: ১৩৮/৬ (নাজিমুদ্দিন ৫৪, মেহরাব ২৭, খালেদ মাসুদ ২৮*; প্রসাদ ২২-২, দিলশান ২১-৩)
ফল: শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস ৪২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: উপুল থারাঙ্গা।