শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তদের ব্যাটিং পাল্লেকেলের পরিবেশের মতো দর্শকদের চোখে মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়েছে। সঙ্গে ক্যান্ডির পাহাড়ের মতো বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহটাকে উচ্চতা দিয়েছে তাদের ব্যাটিং। আগের দিন দারুণ ব্যাট করা শান্ত দ্বিতীয় দিনও থাকলেন সাবলীল, ছন্দে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে রূপ দেন দেড়শতে, সেখানেও থামেননি তিনি। ছুটছিলেন ডাবল সেঞ্চুরির পথে, শেষ অবধি অবশ্য সেটা পাননি। চমৎকার ইনিংসের সমাপ্তি হয়েছে বোকা বনে যাওয়া শটে।
১৭ চার আর ১ ছক্কায় ৩৭৮ বলে তার ১৬৩ রানের ইনিংসটি শেষ হয় লাহিরু কুমারার বলে তার হাতে ফিরতি ক্যাচ তুলে দিয়ে। শান্তর এই আউটে ডাবল সেঞ্চুরি না করতে পারার কিঞ্চিৎ আক্ষেপ যেমন আছে, থাকতে পারে আরও একটি আফসোসও। সেটাতে অবশ্য মুমিনুলও ভাগিদার। দুজন মিলে যদি আর ৫ বল খেলতে পারতেন, তাহলেই মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের বলের দিক থেকে সর্বোচ্চ ৫১৮ বল খেলার রেকর্ডটি ভাঙতে পারতেন।
শান্ত সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন প্রথম দিনেই, দ্বিতীয় দিনটা তাই বেশি স্পেশাল মুমিনুল হকের জন্য। প্রায় আট বছরের ক্যারিয়ার তার, সেঞ্চুরিও তো কম করেননি, দশটি শতক টেস্টে। কিন্তু একটাও যে দেশের বাইরে করতে পারেননি। এই আক্ষেপ নিয়ে শেষবারের মতো শ্রীলঙ্কাতেই গেলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
এখন আর বিদেশের মাটিতে সফরের সময় তো কেউ বলতে পারবেন না- দেশে যত যাই করুণ না কেন, মুমিনুলের তো দেশের বাইরে কোনো টেস্ট সেঞ্চুরি নেই। আগের দশ সেঞ্চুরির চেয়ে মুমিনুলের এই সেঞ্চুরিটা তাই নিশ্চয়ই খানিকটা আলাদা। তবে এটাও আর বড় করা হয়নি।
মুমিনুলের ধৈর্যের প্রতিরূপ হয়ে থাকা এই ইনিংস থেমেছে লাহিরু থিরিমান্নের হাতে, ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে। ১১ চারে ৩০৪ বলে ১২৭ রানে থামে তার ইনিংস। এরপর অবশ্য আর কোনো সাফল্য পাননি স্বাগতিক বোলাররা। আগের দিনের মতো এদিনও লঙ্কান বোলার ও ফিল্ডারদের বেশ খাটতেই হয়েছে।
সেটা অবশ্য কিছুটা কম হয়েছে কিছুটা আলোক স্বল্পতা ও বৃষ্টির কল্যাণে। দিনের খেলা প্রায় দেড় ঘণ্টা বাকি থাকতেই খেলা বন্ধ হয়ে গেছে আলোক স্বল্পতায়। তার আগে বাংলাদেশ অবশ্য করেছে ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান। ১০৭ বলে ৪৩ রান করে মুশফিক ও ৩৯ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত আছেন লিটন দাস। কাল তাদের সামনে লড়াই, সংগ্রহটাকে সত্যিই ক্যান্ডির পাহাড় সমান উচ্চতা দেওয়ার!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৫৫ ওভারে ৪৭৪/৪ (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০, মুশফিক ৪৩*, লিটন ২৫* ; বিশ্ব ৭৫/২, কুমারা ৮৮/১)