বুধবার (০১ মে) সকাল থেকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর অধিকাংশ খাবার হোটেল বন্ধ দেখা গেছে। একই সঙ্গে বন্ধ বিপনিবিতান, মার্কেট, খাবার দোকান। তবে সকালে বন্ধ রাখলেও বিকেলে দোকান খুলতে দেখা গেছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে।
ঠিক একই সময় কাঁধে কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে কাজ থেকে ফিরছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তাদের। মো. হেমায়েত নামের এক শ্রমিক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘দিবস আবার কি! কাজ আছিলো। কাজ করছি। টাকা পাইছি।’
হেমায়েতের সঙ্গে এ সময় দেখা গেছে কয়েকজন নারী শ্রমিককেও। তাদের কাঁধেও কোদাল। যার এক প্রান্তে ঝুলছে মাটি তোলার ঝুড়ি।
ঢাকা মেইলকে শাহিন বলেন, ‘মাইরের মধ্যে জোতার বারি, আর চাকরির মধ্যে চোকিদারি (চৌকিদারি বা নিরাপত্তাকর্মী) দুনিয়ার সবচে জঘন্য কাম। আমগো কোনো ঈদ নাই, ছুটি নাই, দিবস নাই। ঝড়, বইন্যা যাই হউক, আমগো ডিউটি করা লাগবো।’
শ্রমিক দিবসের দিন সকালে রাজধানীতে মিছিল করেন শ্রমিকরা। এ সময় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেলে তাতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। তবে দিনের শেষভাগে এসে শ্রমিকদের রোষানলে পড়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি সবারই জানা। আর সেই সুযোগও নিতে দেখা গেছে অনেককে।
সকাল থেকে দোকান বন্ধ থাকলে বিকেল চারটা নাগাদ দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। পোশাক বিক্রি প্রতিষ্ঠান ‘বেল’ তাদের রিংরোড শাখার দোকান খুলেছে বিকেল চারটার পর। একই সময়ে দোকান খুলতে দেখা গেছে থাই কিং চা নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মীর ভাগ্যেই শ্রমিক দিবসের ছুটি জোটেনি।
ছুটি না পাওয়ার আক্ষেপ প্রকাশ করেছে কৃষি মার্কেট একাকার লেপ-তোষকের দোকানের কর্মী নূর মোহাম্মদ। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটি পাই না। আজকের ছুটিটা তো পাই। এইটাও দেয় নাই। আমরাও তো শ্রমিক।’
এদিকে প্রকাশ্যে শ্রমিকদের কাজ করানোর চিত্র দেখা গেলোও লুকোচুরির চিত্রও কম নয়।
বেশ দক্ষতার সঙ্গে শ্রমিক দিবসে ছুটি না দিয়ে শ্রমিক, কর্মচারীদের দ্বারা কাজ করানোর চিত্র দেখা গেছে কৃষি মার্কেট পাইকারি বাজারে।
মার্কেটে প্রবেশের মূল ফটক বন্ধ থাকলেও ভেতরে দোকান খোলা। পণ্য ওঠানামার জন্য শ্রমিকদেরও রাখা হয়েছে। চলছে বিক্রি।
এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের বিপরীতের ইয়েলো, আর্টস, ইনফিনিটির মতো প্রতিষ্ঠানের শোরুম খোলা রাখা হয়েছে। ছুটি জোটেনি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তাকর্মীদেরও।