নিহত নিজাম উদ্দিন রায়পুর ইউনিয়নের হাটঘাটা গ্রামের মৃত মানিক শেখের ছেলে। তিনি একটি খাবার হোটেলের ব্যবসায়ী।
ডাকাতি ও চুরির একাধিক অভিযোগ নিজামের বিরুদ্ধে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও মধুখালী থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শ্যালিকাকে (১৯) নিয়ে অসুস্থ শ্বশুরকে দেখার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন নিজাম। ওইদিন ফেরার পথে তিনি শ্যালিকাকে তার বাবার বাড়ি মধুখালীর রায়পুর ইউনিয়নের দিঘুলিয়াতে পৌঁছে না দিয়ে হাটঘাটা গ্রামে নিজ বাড়িতে এনে রাখেন।
নিজামের সঙ্গে তার শ্যালিকার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এর আগে ওই মেয়ের বিয়ের উদ্যোগ নেওয়া হলে নিজামের হস্তক্ষেপে সেই বিয়ে হয়নি। এজন্য নিজামের শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিজামের উপর ক্ষুব্ধ।
শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েটিকে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে তা উপেক্ষা করে তাকে নিজের বাড়িতে রাখেন নিজাম।
এজন্য গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজামের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বাড়িতে এসে তাকে বেধরক মারপিট করেন। তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নিজামের ডান হাত, দুই পা এবং মাথায় গুরুতর জখম করেন। এক পর্যায়ে তারা নিজামের দুই চোখে চুন ঢেলে দেন।
পরবর্তীতে নিজামের বড় ভাই আজিমুদ্দিন শেখ গুরুতর আহত নিজামকে উদ্ধার করে একটি ব্যাটারিচালিত রিক্সাভ্যানে করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজামকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পথে শুক্রবার (২২ মার্চ) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে নিজাম মারা যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।