সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আফিফ হোসেন ফিরে যান তখনও টাইগারদের ম্যাচ জিততে দরকার ৬৮ রান। শেষ ভরসা হিসেবে সাইফুদ্দিনকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন সাকিব। তাকে নিয়েই স্মরণীয় এক ইনিংস খেলে দলকে তিন উইকেটে ম্যাচ জেতালেন তিনি।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে নায়ক হয়েছিলেন লিটন দাস। অন্যদিকে ৫ উইকেট পেয়ে পার্শ্বনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে আজ আর পার্শ্ব নয়, ক্যারিয়ারে অসংখ্যবারের মতো আজও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন ব্যাটসম্যান সাকিব। তার অপরাজিত ৯৬ রান হয়তো অনেক সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি।
এই জয় দিয়ে আইসিসি ওডিআই ক্রিকেট লিগে দ্বিতীয় স্থান আরও মজবুত করেছে বাংলাদেশ। ১১ ম্যাচে এখন ৭ জয় নিয়ে ৭০ পয়েন্ট টাইগারদের। শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড।
ব্যাটসম্যান সাকিবের কথা আলাদা করে বলতেই হয় কারণ গত চার ম্যাচে রানের দেখা পাচ্ছিলেন না সাকিব। যা তার সঙ্গে একদমই বেমানান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেন ১৯ রান।
আজ যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন চাপের লেশমাত্র নেই। ২৪১ রানের লক্ষ্যে নেমে ৩৯ রানে তামিম ফিরে গেছেন তখন। কিন্তু খানিক পরেই আসে চাপের বোঝা। ৫০ রান না হতেই সাজঘরে ফিরে যান লিটন ও মিঠুনও। কিছুক্ষণ পর রানআউট হন মোসাদ্দেক।
৭৫ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও ভরসা ছিল মাহমুদউল্লাহ থাকায়। দুজন মিলে বলে বলে রান তুলতে থাকেন। কিন্তু পার্টনারশিপ ৫০ হতেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন মাহমুদউল্লাহ। তারপর আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন মিরাজ ও আফিফ।
শেষ ভরসা হয়েছিলেন সাইফুদ্দিন। অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেলেও যার ব্যাটিং সত্ত্বার দেখা মিলেছে কমই। কিন্তু আজ অপরাজিত ২৮ রান নিয়ে সাকিবকে সঙ্গ তো দিলেনই আশ্বাস দিয়েছেন যে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারের যে আক্ষেপ বাংলাদেশের তা তিনি পূরণ করতেই এসেছেন।
তবে মূল কৃতিত্ব সাকিবেরই। সেই ৩৯ রান থেকে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে। তাও হারারের বোলিং উইকেটে। তার ১০৯ বলে ৯৬ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারি। অর্থাৎ ৬৪ রানই নিয়েছেন রানিং বিটউইন দ্য উইকেট থেকে। জয়ের জন্য শেষে যখন তিন রান দরকার তখন সে রানটা সাকিবের ব্যাট থেকে আসতে দেখাই ছিল প্রশান্তির।
এর আগে জিম্বাবুয়েকে ২৪০ রানে আটকাতেও অবদান ছিল সাকিবের। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই সাজঘরে পাঠিয়েছিলেন রেগিস চাকাভা ও ডিওন মায়ার্সকে। দশ ওভার শেষে ৪২ রান খরচায় এই দুই উইকেট নেন সাকিব।
তবে বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি চার উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম। ব্রেন্ডন টেইলরের উইকেটটা ভাগ্যগুনে আসলেও বাকি উইকেট পেয়েছেন দুর্দান্ত বল করেই। বাকি উইকেটগুলো ভাগ করে নেন তাসকিন, সাইফুদ্দিন ও মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ২৪০-৯: মাধেভেরে ৫৬, টেইলর ৪৬, মায়ার্স ৩৪ ও রাজা ৩০। শরিফুল ৪৬-৪, সাকিব ৪২-২, তাসকিন ৩৮-১।
বাংলাদেশ ২৪২-৭: সাকিব ৯৬*, সাইফুদ্দিন ২৮*, মাহমুদউ্ল্লাহ ২৬। লুক জঙওয়ে ৪৬-২, মুজারাবানি ৩১-১, গারাভা ৩৩-১।