প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা আছে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষের। এ বিষয়ে চালানো একটি জরিপের ফলাফলে এমনটি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট- আইআরআই। বাংলাদেশে জরিপটি পরিচালনা করেছে সংস্থাটির
সেন্টার ফর ইনসাইটস ইন সার্ভে রিসার্চ।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) আইআরআইয়ের ওয়েবসাইটে ‘ন্যাশনাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, মার্চ-এপ্রিল ২০২৩’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। দেশের ৬৪টি জেলার ১৮ বছর বা তার বেশি পাঁচ হাজার অংশগ্রহণকারীর ওপর ওই জরিপ পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন ধরে রেখেছে। তবে বিরোধী দলের জনপ্রিয়তাও বেড়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৪ শতাংশ বলেছেন, দেশ সঠিক পথে চলছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল ৭৬ শতাংশ। ৫৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন দেশ সঠিক পথে নেই। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা উন্নত হলে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন।
জরিপের উত্তরদাতাদের ৯২ শতাংশ বলেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছে, তারা ‘খুব সম্ভবত’ ভোট দেবে। যারা ভোট দিতে চায় না তারা নির্বাচনী জালিয়াতি এবং ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যাকে ভোটদানের প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৪ শতাংশ বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনব্যবস্থায় ফেরাকে সমর্থন করে।
তবে তাদের বেশির ভাগই মনে করে, যে সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন বিরোধীদের এতে অংশ নেওয়া উচিত। আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক স্টিভ সিমা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন দেখা উৎসাহব্যঞ্জক।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা অর্থনীতিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। তবে দেশ আগের চেয়ে গণতান্ত্রিক হয়েছে বলে মূল্যায়ন করেছে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা। ২০ শতাংশ উত্তরদাতা রাজনৈতিক মত প্রকাশে পূর্ণ স্বাধীনতা আছে বলে মন্তব্য করেছে। ২৩ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করে, রাজনৈতিক মত প্রকাশ করা খুব ভয়ের বিষয়।
চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত আইআরআই বাংলাদেশে এ জরিপ পরিচালনা করে। দেশের ৬৪ জেলার ৫ হাজার ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছে জরিপ দল। উত্তরদাতাদের মধ্যে ১৮-৩৫ বয়স গ্রুপে ছিলেন ২ হাজার ৩৪৮ জন। ৩৬ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৩ জন এবং ৫৬ বছরের ওপরে ৯১৯ জন।
উত্তরদাতাদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৬৩৩ জন এবং নারী ২ হাজার ৩৬৭ জন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শহরের ১ হাজার ৫৫০ জন এবং গ্রামের ৩ হাজার ৪৫০ জন।