বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার। মঙ্গলবার দিল্লিতে বাংলাদেশের চলমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়া নিয়ে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের ষড়যন্ত্রে কতিপয় রাজনৈতিক ক্রীড়ানক জড়িত থাকতে পারে বলে জানা গেছে।
দেশটির বিরোধীদল কংগ্রেসের সাংসদ রাহুল গান্ধী বৈঠকে জয়শঙ্করের কাছে জানতে চান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় চলা নাটকীয় সব ঘটনায় বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে পাকিস্তান জড়িত থাকতে পারে কি না।
তার এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার কথা জানান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ভারতের সরকার বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে এবং সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় ভারতের সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে দেশটির সব দলের নেতাদের অবহিত করেন জয়শঙ্কর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করছে; যারা শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে চলেছে।
জয়শঙ্কর বলেছেন, শেখ হাসিনাকে আপাতত কিছু সময় দিতে চায় ভারত। এই সময়ের মধ্যে তিনি তার পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে আমাদের জানাবেন।
বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশি বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা সম্পর্কে জয়শঙ্করের সাথে কথা বলেছেন। তবে হাসিনার সঙ্গে মোদি দেখা করবেন কি না সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে কোনও তথ্য জানানো হয়নি।
গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সোমবার শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ভারতে যান তিনি। বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, শেখ হাসিনা লন্ডনে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এমনকি তার লন্ডন যাত্রার জন্য বিমানে জ্বালানিও ভরা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির দেওয়া এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।