তিস্তা নদীসহ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা সব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য শুধু মিছিল-মিটিং করে ভারতকে পথে আনা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ৪৯ তম ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান পানিচুক্তিগুলোর দিকে আলোকপাত করে দুদু বলেন, সিন্ধু নদীর পানি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যখন ভাগাভাগির বিষয় আসে তখন আরেকটি বিষয় আসে- দুটি দেশই পারমাণবিক শক্তিধর। আমরা ১৯৭১ সালে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, কিন্তু পারমাণবিক শক্তিধর হইনি।
তিনি বলেন, শুধু মিছিল ও মিটিং করে ভারতকে পথে আনতে পারব, এমন না। কূটনৈতিক বিজয় দিয়ে পারব, তাও না। শক্তি ও শান্তি এই দুটোই আমাদের সামনে রাখতে হবে। শক্তি ও শান্তির কোনো বিকল্প নেই। এটি মাথায় নিয়ে যদি আমার সামনে চলতে পারি তাহলে ভারতের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার ও দাবি আদায় করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
এসময় মাওলানা ভাসানীর স্মৃতিচারণ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, মাওলানা ভাসানী একটা কথা বলেছিলেন। এই পানির জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতে পারে। দূরদর্শী নেতা ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের ভালোর জন্য এমন কোনো আন্দোলন নেই যে তিনি শরিক ছিলেন না। এই বাংলাদেশে তিনি ভালোকে ভালো বলতেন, খারাপকে খারাপ বলতেন। তিনি রাজনীতিবিদদের শুধু গুরু ছিলেন না, কারিগর ছিলেন। মাওলানা ভাসানীর রাজনীতিকে যারা ধারণ করতে পারেনি, আমার মনে হয় তারা দৈনতার মধ্যে আছে। তিনি ফারাক্কা লংমার্চের ডাক দিয়েছিলেন। ফারাক্কা লংমার্চে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ নেমে পড়েছিল।
দুদু আরও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এমন একজন মানুষ যার কথা বললে স্বাধীনতা ঘোষণার কথা আসে, মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের কথা আসে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রথম স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ওনার নেতৃত্বেই তো আমরা রাস্তায় নেমে এসেছিলাম। এর সিঁড়িটা কী? এর মাথার ওপরে কী? সেটা হচ্ছে মাওলানা ভাসানী। সেজন্য মাওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে ইতিহাস বলা, লেখা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে তিনি আশীর্বাদ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ভালো কিছু করার জন্য সামনে এগিয়ে যাও। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে জাতিকে, রাজনীতিকে শুধু রক্ষা করেছেন এমন নয়, মাওলানা ভাসানীকেও তিনি সমৃদ্ধ করেছিলেন।
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।