শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ওই বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওমর আলী রূপগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর এলাকার মৃত ফৈজদ্দিনের ছেলে।
ইছাপুড়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) আমিরুল সিকদার জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলার সঙ্গে একটি পানির কলসি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর গুমের জন্য মরদেহটির গলায় কলসি বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে যায়। পরে ছেলে শফিকুল ইসলাম তার বাবা ওমর আলীর মরদেহ শনাক্ত করেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকাল থেকে ওমর আলী নিখোঁজ রয়েছে মর্মে ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওমর আলীর আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম একই এলাকার লিপি আক্তার নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই রফিকুল ইসলাম ও লিপি আক্তার মিলে নানাভাবে অত্যাচার ও ভয়ভীতি করতো ওমর আলীকে।
এছাড়া উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাও করতো। এ কারণে রফিকুল ইসলামকে ত্যাজ্যপুত্র করে দেন বাবা ওমর আলী। গত প্রায় ৬ মাস আগে ছেলে রফিকুল ইসলাম মারা যায়। এরপর লিপি আক্তারের কোনো জায়গা জমি না থাকায় ওমর আলী নিজ বাড়িতে একটি ছাপড়া ঘরে এক মাসের জন্য লিপি আক্তারকে থাকতে দেন। এক মাস পার হওয়ার পর লিপি আক্তারকে ছাপড়া ঘর ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করে শফিকুল ইসলাম ও তার বাবা ওমর আলী।
এ নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর লিপি আক্তারসহ লিপি আক্তারের বাপের বাড়ির লোকজন মিলে শফিকুল ইসলামকে বেধড়ক মারপিট করে।
এ ঘটনা নিয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে শফিকুল ইসলাম। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা নিয়ে কয়েক মাস ধরেই লিপি আক্তারের সঙ্গে ওমর আলী ও শফিকুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছে।
এদিকে ছেলে শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, সম্পত্তিকে কেন্দ্র করেই তার বাবা ওমর আলীকে হত্যা করে গুমের উদ্দেশে কলসির সঙ্গে বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, লাশ উদ্ধার করে নৌপুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। হত্যাকাণ্ড উদঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।