ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসচাপায় শিখা বেগম ও রিমা আক্তার নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় বইছে শোকের ছায়া। শিশু বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার চোখে জল। ঘটনাস্থলে সৃষ্টি হয়েছে হৃদয়বিদারক পরিবেশ। একদিকে নিহত শিখা ও রিমার বান্ধবী এবং শিক্ষকদের আহাজারি অন্যদিকে স্বজনদের বাঁধভাঙা কান্না।
ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর শিখা ও রিমার লাশ তাদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ দুর্ঘটনায় রিমার লাশ কিছুটা অক্ষত থাকলেও শিখার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। শরীর থেকে তার মুখমণ্ডল ও পেট বিছিন্ন হয়ে গেছে। শিখার টুকরো টুকরো মাংস সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। দুর্ঘটনা কতটা ভয়াবহ ছিল তা শিখার লাশ দেখেই বোঝা যায়।
ঘটনাস্থল থেকে শিখার লাশের টুকরো তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় তার মা আহাজারি করে বলেন, আমার মা শিখার এক টুকরো মাংসের দলা হবে, আমি বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতাম। ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে সে যখন বোরকা পড়ছিল৷ তখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম শিখা তুই বোরকা পড়ে কোথায় যাবি। সে বলল, ‘মা কলেজে একটা অনুষ্ঠান আছে’। আমি সেখানে যাচ্ছি। দুপুরের মধ্যে চলে আসব৷ দুপুরের মধ্যে আমার মা ঠিকই আমার কাছে আসছে, তবে সে কথা বলছে না, তার টুকরো লাশ আসছে। আমার শিখার এমন মৃত্যু আমি মা হিসেবে কিভাবে মেনে নেব?
শিখারা ৫ বোন। তাদের কোনো ভাই নেই। ঢাকায় তার বাবা রাজমিস্ত্রী কাজ করেন। ৫ বোনের মধ্যে শিখা ৩য়। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে হতভাগা বাবা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ভোলায় শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে কলেজের আলোচনা সভায় যুক্ত হতে বাড়ি থেকে বের হয়ে অটোরিকশাযোগে কলেজে যাওয়ার পথে বাস চাপায়শিখা ও রিমার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাদের বহন করা অটোরিকশাচালকসহ মোট ৪ জনের প্রাণহানী ঘটে।
শিখা ও রিমা ভোলার দৌলতখান উপজেলার হালিমা খাতুন মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের দুজনের বাড়ি ওই উপজেলার মধ্য জয়নগর গ্রামে।