পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারা দেশে আজ শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচিতে যোগ দিতে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিচ্ছেন। এতে করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যানচলাচল।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরমে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর, সাইন্সল্যাব, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা, নতুন বাজার, কুড়িল বিশ্বরোড, মিরপুর-১০ ও উত্তরায় অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রগতি সরণি এলাকায় অবরোধে শিক্ষার্থীরা
দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হুট করে তারা প্রধান সড়কে নেমে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রগতি সরণির যানচলাচল।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অন্তত তিন হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছেন এই বিক্ষোভ সমাবেশে।
সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা
দুপুর ১২টা থেকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ বিক্ষোভে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামতে দেখা যায় জনতার ঢল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এ আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন পথচারী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার জনগণ। এ আন্দোলন ঘিরে পুরো সায়েন্সল্যাব এলাকার সড়ক আন্দোলনকারীদের অবস্থানে বন্ধ হয়ে যায়।
মাওনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ
এদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি গাড়িতে। এ ঘটনায় ঢাকা-গাজীপুর রোডেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর প্রগতি সরণি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা গেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সদস্যরা এখানে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের বেশ কয়েকটি টিম এখানে কাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।
আন্দোলন প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘খুনি সরকারের সঙ্গে কোনোপ্রকার সংলাপে বসতে আমরা রাজি নই, সেখানে রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। গুলি আর সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনও সংলাপ হয় না।’