শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা, আর্থিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা তদারকিকরণ, লেখাপড়ার মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ধারণা থেকে স্কুলের ক্ষেত্রে ‘ম্যানেজিং কমিটি’ ও কলেজের ক্ষেত্রে ‘গভর্নিং বডি’ বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। অথচ বেশির ভাগ কমিটি স্কুল-কলেজকে নিজের অর্থ আয়ের অন্যতম উত্স হিসেবেই দেখছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ডুবছে এই কমিটির কর্মকাণ্ডের কারণেই।
অধিকাংশ কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো ভূমিকা না রেখে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের বোঝা বাড়িয়েছে। নিয়োগ ও ভর্তিবাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে টাকা খরচ করা ছাড়া খুব একটা দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। যে দায়িত্ব পালনে শিক্ষার মান ও পরিবেশ স্বাভাবিক থাকে, সে দায়িত্বগুলোর প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম তদন্তের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৫ শতাংশ অনিয়মের দায় এই কমিটির। এই অধিদপ্তরের ৫০টি তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এর মধ্যে অন্তত ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের মূল কারণ গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি। এই দুই কমিটি টাকা আত্মসাত্সহ নানা অনিয়ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা পর্যন্ত নিতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তবে ব্যতিক্রমও আছে, যদিও তা সংখ্যায় অনেক কম। উপজেলা ও জেলা সদরে, গ্রামাঞ্চলে এমন প্রতিষ্ঠানও আছে যেখানে ম্যানেজিং কমিটি-গভর্নিং বডির সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে স্কুলগুলোতে আর্থিক সহায়তা দেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টিউশন ফি-ও মওকুফ করে দেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখেন।
ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির প্রবিধানমালা অনুযায়ী দায়িত্ব কী
বিধিমালায় ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির ১৬টি দায়িত্ব পালনে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এগুলোরে মধ্যে তহবিল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ডোনেশন সংগ্রহ, শিক্ষক নিয়োগ, সাময়িক বরখাস্ত ও অপসারণ, বার্ষিক বাজেট অনুমোদন ও উন্নয়ন বাজেট অনুমোদন, ছাত্রছাত্রীদের বিনা বেতনে অধ্যয়ন মঞ্জুরি, ছুটির তালিকা অনুমোদন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত স্থান সংকুলান ও স্টাফদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, জমি, ভবন, খেলার মাঠ, বই, ল্যাবরেটরি, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন ধরনের আর্থিক তহবিল গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ, স্কুলের সম্পত্তির কাস্টডিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রদান নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের নিয়ে প্রি-সেশন সম্মেলনের ব্যবস্থা করা।
কী কাজ করেন ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি
পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মূলত কয়েকটি দায়িত্ব নিয়মিত পালন করেন। প্রতিষ্ঠানের সব লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের সঙ্গে ব্যাংক চেকে সভাপতির স্বাক্ষর থাকতে হয়। আর এই লেনদেন ইচ্ছেমতো করেন সভাপতি। বিভিন্ন খাতে ব্যয় দেখিয়ে তছরুপ করা হয় প্রতিষ্ঠানের ফান্ড। কখনো গভর্নিং বডির সঙ্গে মিলেমিশে অনিয়ম করে থাকেন প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ। এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষকের শূন্য পদ ছাড়া সব ধরনের নিয়োগই দিয়ে থাকে এই কমিটি। ফলে এই নিয়োগে যেমন স্বজনপ্রীতি হয়, তেমনি আর্থিক লেনদেনও হয়। আর্থিক লেনদেন ছাড়া শিক্ষক বা কর্মচারী নিয়োগের উদাহরণ খুবই কম। প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায়ও অনিয়ম করে থাকে এই কমিটি। নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে কাজ দিয়ে থাকে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর থেকে শিক্ষকদের জন্য পাঠানো বেতন-ভাতা ছাড় করতে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত একটি বিল ব্যাংকে পাঠাতে হয় কমিটিকে।
প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কোনো কাজই করে না বেশির ভাগ কমিটি। এমনকি স্কুলের লেখাপড়ার উন্নয়নে কোনো পরামর্শও দেন না তারা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই কমিটি কী শুধু টাকাপয়সা ভাগবাঁটোয়ার জন্যই রয়েছে?
ভিকারুননিসা, মনিপুর, আইডিয়ালসহ দেশের নামি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান আজ নিম্নমুখী। এর নেপথ্যের কারণ গভর্নিং বডি। আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির একজন সদস্য এক ছাত্রীকে বিয়ে করে সমালোচনার মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। একজন সদস্য আবার একটি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এই প্রতিষ্ঠানটির বনশ্রী ও মুগদা শাখা পরিচালনার কোনো অনুমতি নেই। তবুও বনশ্রী শাখায় ৩৭ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে গভর্নিং বডি। গত সপ্তাহে প্রকাশিত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের এক তদন্তে দেখা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানের কয়েক কোটি টাকার অনিয়ম। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই অনিয়মের নেপথ্যে গভর্নিং বডি। এছাড়া বিভিন্ন খাত দেখিয়ে টাকা ব্যয় করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ থেকে গত ১০ বছরে ১০০ কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গভর্নিং বডির এক সভাপতির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান চালাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের নেপথ্যে রয়েছে এই কমিটি। প্রতিষ্ঠানটির আয়ের পুরোটাই নিজেদের পকেটে নেওয়ার জন্য এমপিওভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি ট্রাস্ট করার উদ্যোগ নিয়েছিল গভর্নিং বডির সভাপতিসহ কতিপয় সদস্য। যদিও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এই উদ্যোগকে বেআইনি বলে চিঠি দিয়েছে। গভর্নিং বডির মিটিংয়ের মাধ্যমেও লাখ লাখ টাকা নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে সরকারি একটি তদন্তে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুলেও গভর্নিং বডির অনিয়মের রেশ এখনো চলছে। গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে কয়েক শ শিক্ষার্থীকে নিয়ম না মেনে ভর্তি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে। ঐ কমিটির সভাপতি এখন চার্জশিটভুক্ত আসামি। গভর্নিং বডির সদস্যরা অবৈধভাবে ভর্তিতে কোটা নিয়েছেন। বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাত্ করেছেন। এমন চিত্র দেশ জুড়ে।
রাজধানীর মিরপুর কলেজের বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ গোলাম ওয়াদুদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, সভাপতির নির্দেশনা মেনেই সব করেছি। মৌখিক নির্দেশনায় টাকাও ব্যয় করেছি। কিন্তু সভাপতি নেই। এখন তার অনিয়মের দায় আমাকে বহন করতে হচ্ছে।
গভর্নিং বডির কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান আজ নিম্নমুখী। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা নিয়মিত কমিটি বা অ্যাডহক কমিটি ভেঙে দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
সরকারই তো সবই দিচ্ছে, কমিটি করছে কী
শুধু বেতন-ভাতাই নয়, প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের খরচই বহন করে সরকার। শিক্ষার্থীদের বই থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চসহ সব আসবাবপত্র, বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ, নতুন ভবন তৈরি, ভবন সংস্কার, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের খরচ সবই বহন করে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের বড় অংশটিই ব্যয় হয় এসব খাতে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে অযাচিত খবরদারির দায়িত্ব পরিচালনা পর্ষদের। সরকারি অর্থে প্রতিষ্ঠানের সবকিছু চললেও সরকারের হাতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ নেই। শিক্ষকরা বলছেন, যখন সরকার পুরো বেতন-ভাতা দিত না, তখন শিক্ষকদের বেতনের টাকা সংগ্রহ করে দেওয়ার জন্য কমিটির দরকার ছিল। চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র কিনে দিতে হতো। তবে এখন আর এ কাজ পরিচালনা পর্ষদের করতে হয় না।
গভর্নিং বডিতে কারা থাকছেন
একসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য সর্বোচ্চ চারটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে থাকতে পারতেন। পরে ২০১৬ সালে এক মামলার আলোকে ২০২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রায় দেয় হাইকোর্ট। সেখানে হাইকোর্ট উল্লেখ করে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে সংসদ সদস্যকে মনোনয়ন বা নিয়োগ দেওয়া সংবিধানের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর পর থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা সভাপতি হতে পারেন না। তবে এখন গভর্নিং বডির সভাপতি বা বিদ্যোত্সাহী বা অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। এমন সদস্যও রয়েছেন, যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ। স্কুলে কখনো যাননি এমন ব্যক্তিও আছেন এই তালিকায়। ওয়ার্ড কমিশনার, সরকার দলীয় বিভিন্ন সংগঠন, অঙ্গসংগঠনের ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটিতে যুক্ত করা হয়। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
তদারকি সংস্থা ‘শিক্ষা বোর্ড’ কী করছে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদনসহ সার্বিক বিষয়গুলো তদারকির দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডগুলোর। দেশের ১০টি শিক্ষাবোর্ড নিজ নিজ আওতাধীন এলাকার এই তদারকি করে থাকে। কিন্তু কমিটি অনুমোদনের পর আর খুব একটা তদারকি করে না এই বোর্ডগুলো। এসএসসি ও এইচএসসির মতো দুইটি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা বণ্টন ও ফলাফল প্রকাশ, বিভিন্ন শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও ফরম পূরণ কার্যক্রম, সার্টিফিকেট প্রদান, নাম সংশোধনসহ সারা বছরই নানাকাজে ব্যস্ত থাকে এই বোর্ডগুলো। ফলে গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির এসব অনিয়মের তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের সময় তাদের থাকে না। যতটুকু থাকে, তা-ও গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালীদের কারণে পেরে ওঠে না।
কমিটির সভাপতি বা অন্য কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম প্রমাণিত হলে কমিটি ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই বোর্ডগুলোর। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর কমিটি ভেঙে দেওয়ার উদাহরণ খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে কমিটির অনিয়ম ও দুর্নীতি কার্যক্রম চলতেই থাকে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার একটি নামি স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিয়মিত অধ্যক্ষ থাকার পরও গভর্নিং বডির অন্যায় আবদার পূরণ না করার কারণে তার পরিবর্তে অন্য একজন শিক্ষককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয় গভর্নিং বডি। বৈধ অধ্যক্ষকে কোনো কাজ করতে দেওয়া হয় না। বিষয়টি নিয়ে ঐ বৈধ অধ্যক্ষ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে অভিযোগ করেন। বোর্ডের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ঐ অধ্যক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘তারা প্রভাবশালী, মিলেমিশে চলার চেষ্টা করেন’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, গভর্নিং বডির সভাপতি এবং সদস্যরা প্রভাবশালী হওয়ায় মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিবদের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকে। ফলে কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের কর্মকর্তাই বিপাকে পড়তে পারেন। অনেকে বদলি হয়ে যেতে পারেন। তাই বোর্ড কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
এই কর্মকর্তা প্রশ্ন রাখেন, এই কমিটির তদারকির ভার বোর্ডগুলো থেকে সরিয়ে অন্য কোনো সংস্থাকে দেওয়া যায় কি না? কিন্তু বোর্ড চেয়ারম্যানরা তদারকির ক্ষমতা নিজেদের কাছেই রাখতে চান। বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন খান বলেন, কমিটির অনিয়মের অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজে পরিচালনা পর্ষদের প্রয়োজন আছে। তবে যেভাবে পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, সেটা দুঃখজনক। এই পদকে ব্যবহার করে বাণিজ্যেরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিধিমালা সংশোধন করে এই পর্ষদকে আরো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন শিক্ষা বোর্ডের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
১৯৭৭ সাল থেকেই এই কমিটি, সংস্কারের উদ্যোগ
স্বাধীনতার পর থেকে ব্যক্তি উদ্যোগেই চলত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৮০ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। তখন থেকে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ দিত সরকার। এরপর থেকে তা বাড়তে থাকে। ২০০৪ সাল থেকে শতভাগ বেতনই দিচ্ছে সরকার। আর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্যই ১৯৭৭ সালে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি বিধিমালা প্রণয়ন হয়। ২০০৯ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা সংশোধন হয়। পরবর্তীকালে আদালতের আদেশে এই বিধিমালা সংশোধন করা হয়।
বর্তমানে গভর্নিং বডি ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা অনুযায়ী বাংলাদেশি নাগরিক যে কেউ যতবার সম্ভব ততবার সভাপতি হতে পারেন; কিন্তু তাতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত গভর্নিং বডি ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা অনুযায়ী একনাগাড়ে দুই মেয়াদের বেশি কাউকে সভাপতি হওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি আর সভাপতি হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা—উচ্চ মাধ্যমিক।