ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের দেয়া ৩১৯ রানের টার্গেট টাইগাররা শেষ ওভারে ৩ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেই। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায়, ফলে এ ম্যাচ জেতায় ১-০ তে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। এদিকে আজকের ম্যাচেও ছিল বৃষ্টির বাধা। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়েরও পরে শুরু হয় খেলা, ম্যাচ গড়ায় ৪৫ ওভারে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে টসে জিতে আয়ারল্যান্ডকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথম ওভারে বল করতে আসা হাসান মাহমুদ ওভারের পঞ্চম বলেই হানেন আঘাত। হাসানের ইনসুইং এ রক্ষণাত্মক খেক্তে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন আইরিশ ওপেনার স্টার্লিং। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিলে তা পক্ষে যায় টাইগারদের। এরপর ইনিংসের সপ্তম ওভারেই হাসান ফেরান আরেক আইরিশ ওপেনার ডোহেনিকে।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়া আইরিশদের হাল ধরেন হ্যারি ট্যাক্টর এবং এন্ড্রু বালবার্নি, গড়েন ৯৮ রানের জুটি। দলীয় ১১৪ রানে বালবার্নি ৪২ রান করে আউট হলেও পরবর্তী দুই ব্যাটার টাকার ও ক্যাম্পারকে সাথে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ট্যাক্টর। শরীফুলের বলে টাকার এবং তাইজুলের বলে ক্যাম্পার আউট হলেও একপাশ আগলে ব্যাটিং করেন ট্যাক্টর, মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৯৩ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত শতক।
ডকরেলকে সাথে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকা টাকার দলীয় ২৮২ রানে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত মারকুটে ব্যাটিং চালিয়ে যান ডকরেল। এতেই নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২০।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি টাইগারদের। ১৩ বলে ৭ রান করে অধিনায়ক তামিম আউট হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তিনে নামা নাজমুল শান্ত আরেক ওপেনার লিটন দাসের সাথে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও যোগ্য সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন লিটন। ২১ রান করে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে। এরপর সাকিব আল হাসানের সাথে কিছুক্ষণের জিন্য জমে ওঠে শান্তর জুটি। এ জুটি কিছুটা আশার আলো দেখালোও ২৭ বল খেলে ৫ চারে করা ব্যক্তিগত ২৬ রানে ফিরে যান সাকিবও।
সাকিব ফিরে গেলেও চারে নামা তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে ধীরে এগোতে থাকেন, তুলে নেন ৪৯ বলে নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক। তবে কিছুটা থিতু হতেই শান্তকে অপর প্রান্তে রেখে চোখ ধাঁধানো সব শট খেলতে থাকেন হৃদয়। এ দুই ব্যাটারের জুটিতে ম্যাচ জয়ের আশা ফিরে পায় টাইগাররা। ৪৯ বলে ফিফটি করেন হৃদয়। এদিকে হৃদয়ের সাথেই পাল্লা দিয়ে নিজের প্রথম ব্যক্তিগত শতকের দিকে এগোতে থাকেন শান্ত। এক পর্যায়ে ৮৩ বলে তুলে নেন ওয়ানডেতে নিজের প্রথম শতক।
শান্তর শতকের পরই কিছুটা ধস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ৬৮ রান করে হৃদয় ফিরে যাবার পর ১১৭ রান করে প্যাভিলিয়ন এর পথ ধরেন শান্ত নিজেও। ক্রিজে আসেন দুই নতুন ব্যাটার মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদী মিরাজ। উইকেটে থিতু হওয়ার আভাস দিয়েও এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে ফিরে যান মিরাজ।
এদিকে টাইগার শিবিরে তখন নেমে এসেছে হারের আশঙ্কা। তবে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাইজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন মুশফিক। শেষ দিকে ম্যাচে তখন নেমে এসেছে টি টোয়েন্টির উত্তেজনা। শেষ ওভারে বাংলাদেশের ৫ রানের প্রয়োজন হলে হেসেখেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
এ জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ১৪ মে।