টেলিভিশনে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান।
সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে এর বিচারক জুলফিকার হায়াতে উপস্থিত হন শাকিব খান। এরপর জবানবন্দি দিতে কাঠগড়ায় উঠেন। এসময় বিচারক বলেন, সময় মতো আসতে হবে। আগের দিনই বলে দেওয়া হয়েছে কখন আসতে হবে।
তখন শাকিব খান বলেন, জ্বি স্যার। এরপর বিচারক বলেন, এটা তো আপনার আইনজীবী ভালো জানার কথা। এরপর তিনি জবানবন্দি দিতে শপথ পাঠ করেন।
জবানবন্দিতে শাকিব খান বলেন, রহমত উল্লাহ টেলিভিশনে আমার নামে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি হঠাৎ আসেন, হঠাৎ বক্তব্য দিয়ে পালিয়ে যান। তিনি বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে আমি দুবার পালিয়ে এসেছি। অথচ অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই। আমার নামে কোনো মামলাও হয়নি।
এরপর বিচারক বললেন, ঠিক আছে আপনি সই করে যাবেন। আদেশ পরে দেওয়া হবে। এরপর শাকিব খান সই করে আদালত থেকে বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর বিচারক মামলার আদেশ দিলেন। আগামী ৬ জুন পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
এ বিষয় শাকিব খানের আইনজীবী খায়রুল হাসান বলেন, টেলিভিশনে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় রহমত উল্লাহ বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে রহমত উল্লাহ বিরুদ্ধে মামলা করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ পরে আসামি রহমত উল্লাহকে আগামী ২৬ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন।
এরপর শাকিব খান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রহমত উল্লার বিরুদ্ধে মামলা করতে সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসেন। বিচারক তাকে সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে আদালতে আসতে বলেন। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে আদালতে আসলে বিচারক তাকে বলেন, সময় মতো আদালতে আসতে হবে। জবাবে শাকিব খান বলেন, জ্বি স্যার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি রহমত উল্লাহ বাদী শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করে এবং সিডিউল না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ করেন। আসামি আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে শাকিবকে সামাজিকভাবে অপমান ও হেয় প্রতিপন্ন করে। আসামি নিজেকে প্রযোজক হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে শাকিবের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মানসম্মানের তোয়াক্কা না করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে মিথ্যা পরিচয় ধারণ করে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে উল্লেখিত ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ করেন।
মামলার সাক্ষীরা মানহানিকার ও মিথ্যা বক্তব্য গুলোর লিংক পাঠালে শাকিব খান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে শাকিব আসামি রহমত উল্লাহের এ ধরনের কার্যক্রমের উদ্দেশ্য জানার জন্য এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ভিত্তিহীন ডিজিটাল ডিভাইসে প্রচার না করার জন্য যোগাযোগ করেন। আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে বলে যে ‘সমাজে তোর মানসম্মান রাখবো না, তোর ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেবো। ভবিষ্যতে তার চেয়েও ভয়াবহ বক্তব্য প্রকাশ করবো।’