আট শর্তে অবশেষে এমপিভুক্ত হচ্ছেন বাদ পড়া ডিগ্রি (পাস) কলেজের তৃতীয় শিক্ষকরা। ফলে এক দশকের বেশি সময় বিনা বেতনে চাকরি করা তৃতীয় শিক্ষকদের অনিশ্চয়তা ও কষ্টের জীবনযাপনের অবসান হচ্ছে।
গতকাল বুধবার ডিগ্রি স্তরের তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তাদের এমপিওভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এমপিওভুক্ত হওয়া ডিগ্রির তৃতীয় শিক্ষকরা প্রভাষক হিসেবে চাকরি শুরু করবেন নবম স্কেলে, ২২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে। এর সঙ্গে তারা অল্প কিছু বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা পাবেন। এর আগে ২০১৮ সালে ২ জানুয়ারি ডিগ্রি স্তরের কয়েকজন তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী ডিগ্রি স্তরে একটি বিষয় পড়ানোর জন্য একটি কলেজে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হয়। কিন্তু এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী কলেজে দুজন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা যায়। ফলে ৩ জনকে নিয়োগ দিলেও একজন এমপিওভুক্তির বাইরে থেকে যান। কলেজগুলোতে ওই শিক্ষককে ‘তৃতীয় শিক্ষক’ বলা হয়। এমপিওভুক্ত হতে তৃতীয় শিক্ষকেরা উচ্চ আদালতে গেলে আদালত তাদের পক্ষে আদেশ দেয়। এর পর থেকে এসব শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা শুরু হয়।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট অর্থ বিভাগের সম্মতিতে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি স্তরে গভর্নিং বডির নিয়োগ দেওয়া তৃতীয় শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারবেন।
এমপিওভুক্তির শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ডিগ্রি স্তর এমপিওভুক্ত থাকতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী তৃতীয় শিক্ষকের নিয়োগকালীন কাম্য যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে কর্মরত থাকতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল জারি করা পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যানবেইসে অনলাইনে সংগৃহীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ডাটাবেইসে সংরক্ষিত তথ্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে তুলনামূলক যাচাই-বাছাই করতে হবে। ডাটাবেইসে তথ্য যথাযথ না থাকলে কোনো তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবরের পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে হবে; করা হয়নি এরূপ প্রতিষ্ঠানে নতুনভাবে কোনো তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে না। তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক কাম্য শিক্ষার্থী (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তথ্য অনুযায়ী) থাকতে হবে, তবে বর্তমানে কাম্য শিক্ষার্থী না থাকায় কোনো শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে না পারলে পরে কাম্য শিক্ষার্থী পূরণ হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে এমপিওভুক্ত হতে পারে।