রাজশাহীর বাঘায় স্ত্রীর চুল কেটে মারপিটের পর ভয়ভীতি দেখিয়ে তালাক নিয়েছেন স্বামী আমির উদ্দিন। আহত স্ত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলার উত্তর গাওপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামের দিনমজুর হারেজ উদ্দিনের মেয়ে জরিনা খাতুনের সঙ্গে বাঘা পৌর এলাকার উত্তর গাওপাড়া গ্রামের ছামির উদ্দিনের ছেলে আমির উদ্দিনের এক বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কারণে অকারণে জরিনাকে নির্যাতন ও মারপিট করেন স্বামী আমির।
স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার বাবার বাড়িতে চলে যান স্ত্রী। আবার বুঝিয়ে নিয়ে যান আমির। তারপর দুই-এক দিন ভালো থাকার পর আবার নির্যাতন করেন।
১ জানুয়ারি আমির উদ্দিনের লুঙ্গি ধুয়ে দিতে দেরি হওয়ায় স্ত্রীকে মেধড়ক মারপিট করে মাথার চুল কেটে দেন। তারপর স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয় কাজি অফিসে গিয়ে তালাক নিয়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বাবার বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরদিন ২ জানুয়ারি দুপুরে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
জরিনা খাতুনের বোন চাম্পা বেগম বলেন, আমার বাবা অত্যন্ত দরিদ্র মানুষ। দুঃখ কষ্ট করেও বোনকে স্বামীর সংসার করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বোনের কপালে তা আর হলো না। বোনকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম। আগে চিকিৎসা নিয়ে পরে থানায় আসতে বলেছে পুলিশ। বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে।
জরিনা খাতুন বলেন, অভাবের তাড়নায় আমি সরেরহাট এতিম খানায় ছিলাম। সেখানে তার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পার্ক হয়ে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। কারণে অকারণে মারধর করা হয়। এমনকি আমার মাথার চুল কেটে মারপিট করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী আমির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ধরনের এক নারী থানায় এসেছিলেন। আগে চিকিৎসা নিতে বলেছি। এরপর অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।