নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বড়ভাইকে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগে তার স্ত্রী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ছোট ভাই। সেই মামলা তদন্তে গিয়ে গুম হওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছেন অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।
সোমবার (৪ জুলাই) বিকেলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার সাইয়েদ আহমেদ জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম শাহজাহান। তার বাড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের বাদে আমতৈল গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে। তাকে জামালপুরের নুরুন্দি শৈলেরকান্দা পীরের মাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। মামলার বাদী হলেন শাহজাহানের ছোট ভাই আবুল খায়ের। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- শাহজাহানের স্ত্রী মিলি আক্তার (২২) ও শ্বশুর ফজলু মিয়া (৫০)।
সিআইডি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ আবুল খায়ের তার ভাবি ও তাওইয়ের (ভাবির বাবা) বিরুদ্ধে বড় ভাই শাহজাহানকে হত্যার পর মরদেহ গুমের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ওই দিন রাতে মামলাটি থানায় রেকর্ডভুক্ত হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সবসময় কথা কাটাকাটি হতো। এ নিয়ে মিলি আক্তার রাগ করে বাবাবাড়ি চলে যান। ১৫ জানুয়ারি বিকেলে মিলি আক্তারের ফোন পেয়ে শাহজাহান তার শ্বশুরবাড়ি যাবেন বলে বাড়ি থেকে বের হন।
পরদিন আলী ওসমানকে (বাদীর ভাই) ফোনে ভাবি জানান, তার স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে প্রথমে নিখোঁজের জিডি ও পরে আদালতে হত্যা মামলা করেন আবুল খায়ের।
নেত্রকোনা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার সাইয়েদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটির তদন্তভার সিআইডি পাওয়ার পর বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি শাহজাহান জামালপুরে অবস্থান করছেন। ১ জুলাই শৈলাকান্দা পীরের মাজার এলাকা থেকে তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করি। শাহজাহান আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে পরিবারে অশান্তি ও কলহের কারণে স্বেচ্ছায় সেখানে চলে গেছেন বলে জানান।’
হত্যা মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী ইসলাম খান বলেন, ‘আমার ক্লায়েন্ট যাতে সম্পত্তিতে ভাগ বসাতে না পারে এ জন্য বাদীপক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নাটক সাজিয়েছেন। বাদীপক্ষের লোকজনসহ শাহজাহান নিজেও জানেন তার স্ত্রী ও শ্বশুরকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। জীবিত জেনেও তারা ক্লায়েন্টকে সামাজিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। গত ৯ জুন মামলার তারিখে আমার ক্লায়েন্ট আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। আগামী তারিখে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।’