‘লাশগুলো সড়ক ও পাশের ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রথমে আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এরপর একে একে লাশগুলো উদ্ধার করি।’
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষের পর লাশ উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া ওসমানীনগরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফখরুল ইসলাম এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘ওসমানীনগরের বেগমপুরে খুব ভোরে আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে গুরুতর আহতাবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের কাছে খবর আসে দক্ষিণ সুরমায় আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বহু প্রাণহানির শঙ্কা আছে। ওই আহত ব্যক্তিকে নিয়েই ঘটনাস্থলে যাই।’
তিনি বলেন, ‘লাশগুলো সড়কের পাশে, সড়কের পাশে ঝোপের মধ্যে পড়ে ছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রথমে আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এরপর একে একে লাশগুলো উদ্ধার করি।’
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এরকম দুর্ঘটনা আগে দেখিনি। দুর্ঘটনাটি দেখে মনে হচ্ছে ট্রাকের চালক ঘুমিয়ে ছিলেন। যার জন্য এই দুর্ঘটনা। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসা চালকেরা না ঘুমিয়ে সারারাত ট্রাক চালিয়ে নিয়ে আসেন। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কাও বেশি থাকে। আর এই দুর্ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে বালুবাহী ট্রাকটি ছিল খুবই দ্রুতগামী।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের বহনকারী পিকআপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পিকআপ ও ট্রাক মূলত মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সিলেট থেকে ওসমানীনগরে ঢালাই কাজে প্রায় ৩০ জন শ্রমিককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তারা ছিলেন গাদাগাদি করে বসা। সেইসঙ্গে পিকআপে ছিল ঢালাই কাজের মিক্সার মেশিন, কোদাল, বেলচাসহ আরও অনেক যন্ত্রপাতি। মিক্সার মেশিনের ওপরও তিন-চার জন শ্রমিক বসা ছিলেন।’
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দোহা জানান, সিলেট মহানগর থেকে পিকআপে করে প্রায় ২৪/২৫ জন নারী-পুরুষ নির্মাণ শ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছলে মুনশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যান আরও তিনজন।