স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহাসড়ক অবরোধের সময় ইউএনও শামীম মিয়া আকস্মিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এতে ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের সাথে তার তীব্র বাদানুবাদ সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ উঠেছে, এক পর্যায়ে ইউএনও স্থানীয় বিএনপি নেতা সায়েদুজ্জামান কোয়েলকে গ্রেপ্তারের জন্য স্থানীয় থানা পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দেন। ইউএনও’র এমন আচরণে আন্দোলনকারীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরিস্থিতি চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে পড়ে।
রেলপথ অবরোধের ফলে গত ২১ এপ্রিল থেকে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে, যা জনসাধারণের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়েছে। এর ওপর মহাসড়ক অবরোধের ফলে জেলা শহরসহ অন্যান্য দুটি উপজেলার সাথে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন আটকা পড়েছে। যদিও প্রথমে জরুরি সেবার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে ট্রাক চালকদের অবরোধ প্রত্যাহারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, ইউএনও শামীম মিয়া জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছেন। তার বিতর্কিত হস্তক্ষেপের কারণেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হয়েছে। তারা হুশিয়ারি দিয়েছেন, সন্ধ্যার মধ্যে রেল বিভাগ তাদের দাবি না মানলে এবং ইউএনও’র বিতর্কিত আচরণের কোনো সুষ্ঠু ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন এবং জেলার অন্যান্য অংশেও অবরোধ ছড়িয়ে দেবেন।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, ইউএনও’র অপারদর্শী পদক্ষেপের কারণে লালমনিরহাটের মতো একটি শান্ত এলাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এবং জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা সায়েদুজ্জামান কোয়েল বলেন, তিনি শুরু থেকেই একটি পক্ষ নিয়ে আমাদের সঙ্গে বাধা সৃষ্টি করেছেন। এমনকি দেশীয় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম এখানে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এরপরের বাদানুবাদকালে আমাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। এছাড়াও আমার নেতৃত্ব নেই বলেও উচ্চকণ্ঠে ভাষণ দেন। এতে আমার সম্মানহানি হয়েছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিয়া বলেন, গত রাতের ঝড়ে এই অঞ্চলে অনেক ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এই অঞ্চলে। এছাড়াও তীব্র যানজটের কারণে অনেক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। তাই এই অবরোধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। ওখানে কোনো রকম কথা কাটাকাটি হয়নি।