বাজারে নানা পণ্যের দাম বাড়ার হিড়িকের সঙ্গে কমেছে মুদি ব্যবসায়ীদের লাভের পরিমাণ। পণ্যের ক্রয় মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই নতুন করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হয়েছে। আবার যাদের পক্ষে নতুন বিনিয়োগ সম্ভব হয়নি, তারা ব্যবসা করছে টানাপোড়েনের সঙ্গে।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
দেড় বছর আগেও ৫ লিটার সয়াবিন তেলে লাভ হতো ৫০ টাকা। তখন বিনিয়োগের পরিমাণও ছিল কম।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন জানান, বর্তমানে সরাবিন তেল ৫ লিটারের বোতল দোকানির কেনা ৮৬০ টাকা। আর বিক্রি ৮৮০ টাকা।
ফরহাদ বলেন, জিনিসের দাম বেড়েছে, আমাদের বিনিয়োগ বেড়েছে, কিন্তু লাভ বাড়েনি বরং কমেছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এই বাড়তি দামের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাকে। ফরহাদ বলেন, ‘দোকানে যে ইনভেস্ট ছিল, সে টাকার মালামালে সব সময় দোকান ভরা থাকত। এখন দাম বাড়ার কারণে মালামাল দোকানে যেন অর্ধেক কমে গেছে। সব মালামাল রাখতে এবং দোকান ভরা রাখতে আবার ইনভেস্ট করেছি। বারবার তো সম্ভব না। খুবই সমস্যা হয়ে যাচ্ছে।’
ব্যবসায়ীদের মতে, তেলের মতো একই অবস্থা চিনি, সুজি, আটার ক্ষেত্রেও। বর্তমানে এক কেজি চিনি খোলা বিক্রেতা ৯২ টাকায় কিনছেন। বিক্রি করছেন ৯৫ টাকা। সুজি ৪৫ টাকা কেনা, বিক্রি ৪৮ টাকা।
বিনিয়োগ বেড়েছে আটায়। লাভ বাড়েনি। এক বছর আগে ৫০ টাকা বিনিয়োগে আটা থেকে লাভ আসত ১০ টাকা। এখন ১২০ টাকা বিনিয়োগ করে ১০ টাকাই লাভ হয় ব্যবসায়ীদের।
রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার মুদি ব্যবসায়ী সাগর হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করার অবস্থায় আছি। দোকানে নতুন করে ৪০ হাজার টাকা ঢুকাইছি। তবুও দোকান খালি। একটা জিনিস আছে তো আরেকটা নাই। খুবই হিমশিম খাচ্ছি।
এর কারণ সম্পর্কে জানিয়ে সাগর বলেন, জিনিসের দাম বাড়ছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রোডাক্টের দাম বাড়েই। আবার এর সঙ্গে আমাদের লাভের পরিমাণ কমে যায়।
নামি কোম্পানির পণ্যের দাম বাড়ার হিড়িক ভুইফোঁড় কোম্পানিদের জন্য সুবিধা বয়ে এসেছে। বিক্রেতাদের লাভের পরিমাণ বেশি দেখিয়ে নানা ভুয়া পণ্যও দেওয়া হচ্ছে দোকানগুলোতে। রাজধানীর পশ্চিমের এলাকাগুলোর মধ্যে তুলনামূলক অনুন্নত এলাকায় বেনামি কোম্পানির পণ্যে এখন সয়লাব।