মানুষের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনায় নিয়ে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ তুলে দিয়ে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ফর্মুলার দিক যাচ্ছে সরকার। আগামীকাল রবিবার থেকে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখা যাবে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার বিষয়ে গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আদেশ জারি হয়েছে। দোকানপাট ও শপিং মল খোলার সঙ্গে গণপরিবহন যুক্ত। তবে মন্ত্রিপরিষদের আদেশে এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে দ্রুতই গণপরিবহন চালুর বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
রবিবার থেকে দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর বাস মালিকরাও এখন গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে পরিবহন চালাতে চান পরিবহন মালিকরা। এ নিয়ে পরিবহন মালিকরা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সচিবের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন।
এ ব্যাপারে পরিবহন চালানোর বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেন, বাস চালানোর ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাস চালাতে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আশা করছি লকডাউন ২৯ এপ্রিল থেকে বাস চালাতে পারব।
তবে গণপরিবহন চালুর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সামনে ঈদ। এ সময়ে রাজধানীতে গণপরিবহন কিংবা দূরপাল্লার বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নিলে আর লকডাউন থাকবে না। গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী ২৮ এপ্রিলের আগে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, চলমান ‘লকডাউন’ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনায় রেখে দোকানপাট ও শপিংমলে দেওয়া হচ্ছে। কেউ যেন মাস্ক ছাড়া কেনাকাটা না করে সে বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।
দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও গণপরিবহন কবে চলবে- জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২৮ এপ্রিল থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে। ২৮ এপ্রিলের পরে আর কঠোর লকডাউন নয়, চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। তবে নিশ্চিত করা হবে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাস্ক পরেই আমাদের চলতে হবে। কেউ যেন মাস্ক ছাড়া না বের হয়। সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সবাই যেন মাস্ক পরে। নো মাস্ক নো সার্ভিস- এ বিষয়টি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে অফিস-আদালত, গণপরিবহন এবং দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক নির্দেশনায় ২৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ২২ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমল খুলে দেওয়ার দাবি জানায়। দোকানপাট শপিংমল খোলার অনুমতি দেওয়ার পর পরিবহন মালিকরা আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে বাস চালুর দাবি জানিয়েছে। ঈদের আগে ২৮ এপ্রিলের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকেও আভাস পাওয়া গেছে।