২০২০ সালের পর থেকে আপনি বিশ্বের কোথায় বাস করছেন তা আর মোটেও গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। আপনি অফিসের কাজ, পড়াশোনা, সোশালাইজিং কিংবা নিতান্তই ‘আইসোলেশন’-এ থাকা, যাই করেন না কেন, ধরে নেওয়া যায় দিনের বেশিরভাগ সময় আপনার ঘরেই কেটেছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই চারদিকে শঙ্কা আর অনিশ্চয়তা আমাদের স্বাভাবিক নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে রুটিনে এসেছে নানা পরিবর্তন, আর সামাজিক জীব হিসেবে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে নানা প্রতিকূলতার। আরোপিত বিধিনিষেধ মেনে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে আমাদের একমাত্র উপায় ছিল ঘরে থাকা এবং অপ্রত্যাশিত সব বিষয়ের সঙ্গে মানিয়ে চলতে সে অনুযায়ী নিজেদের জীবনধারায় পরিবর্তন আনা।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্বের বিধান ও দেশজুড়ে ঘোষিত লকডাউন মেনে চলার জন্য স্বাভাবিকভাবেই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। প্রযুক্তিগত ক্ষমতায়নের ফলে মানুষ এখন ভার্চ্যুয়ালভাবে কানেক্টেড থাকতে পারছে, বিশ্বে চলমান খবরাখবর সম্পর্কে জানতে পারছে, অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে, বাসা থেকে কাজ করতে পারছে, কেনাকাটা এমনকি বিনোদনের প্রয়োজনীয়তাও পূরণ করছে কানেক্টিভিটির মাধ্যমে।
এক্ষেত্রে সবার ডিজিটাল জীবনধারার সব প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে, তাদের জীবনকে আরও সহজ করে তোলার ওয়ান-স্টপ সমাধান হচ্ছে ‘মাইজিপি’। যাত্রা শুরুর পর থেকে অ্যাপটি মোট তিন কোটি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। বিভিন্ন অফার পেতে কিংবা ব্যালেন্স চেক ও অ্যাকাউন্ট চালনা করতে কঠিন কঠিন কোড কষ্ট করে মনে রাখার দিন এখন সুদূর অতীত। গ্রাহকরা এখন তাদের প্যাকেজ প্ল্যান, হিস্ট্রি, অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স, এফএনএফ, ওয়েলকাম টিউন, মিসড কল অ্যালার্টসহ আরও অনেক কিছু মাইজিপি’র মাধ্যমে দেখতে পারেন।
এছাড়া ব্যবহারকারীরা তাদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স, প্যাকেজ, প্ল্যান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় স্বাচ্ছন্দ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে এ অ্যাপের সঙ্গে তিনটি মোবাইল নম্বর ও সর্বোচ্চ ১৫টি আইওটি ডিভাইস লিংক করতে পারেন। মাইজিপি অ্যাপ গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী মাত্র কয়েক ক্লিকেই দেয় সহজ সমাধান। মাইজিপির নতুন ড্যাশবোর্ডে গ্রাহকরা অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এক নজরে দেখতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই স্বাচ্ছন্দ্যে রিচার্জ ও অন্যান্য অনেক কাজ সহজে করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে- পছন্দসই বান্ডলের মাধ্যমে ফ্লেক্সিপ্ল্যান তৈরি ও বিভিন্ন ডেটা বোনাস উপভোগ করার সুবিধা, যা কেবল মাইজিপি অ্যাপেই পাওয়া যায়। এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট ডেটা বান্ডেল কেনার মতো পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলেও গ্রাহকরা সহজেই ইন্টারনেট লোন নিতে পারবেন এবং পরবর্তীতে তা পরিশোধ করতে পারবেন।
মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ও সার্ভিস পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সুবিধা উপভোগ করতে পারেন। যেমন- প্যাকের ওপর ৫০ শতাংশ বোনাস, ক্যাশব্যাক অফার ও রিচার্জ ডিল। মাইজিপির মাধ্যমে প্রতিবার কোনো প্যাকেজ বা সেবা কেনার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা রিওয়ার্ড পয়েন্ট লাভ করবেন এবং এ পয়েন্ট দিয়ে তারা বিনামূল্যে ইন্টারনেট ও এসএমএস প্যাক কিনতে পারেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাইজিপি অ্যাপ একটি সাধারণ সেলফ-সার্ভিস অ্যাপ থেকে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সমাধানে পরিণত হয়েছে। অ্যাপটি গ্রাহকদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটির সব সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের ডিজিটাল পার্টনার হওয়ার মাধ্যমে লাইফস্টাইল ও বিনোদন সংক্রান্ত বিভিন্ন কনটেন্ট উপভোগের সুযোগ তৈরি করেছে।
ব্যবহারকারীর ব্যবহারের ধরন ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের পুরো নতুন একটি প্যাক কেনার পরিবর্তে প্যাক কাস্টোমাইজ করার সুবিধা নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি এর সঙ্গে চলমান ইন্টারনেট প্যাকের ভ্যালিডিটি বৃদ্ধি, জরুরি সময় ইন্টারনেট লোন নেওয়ার সুযোগ ও বিস্কুট প্যাক কেনার সুবিধাও রয়েছে মাইজিপি অ্যাপে।
গ্রাহকদের সামাজিকভাবে সক্রিয় রাখার লক্ষ্যে মাইজিপি অ্যাপে রয়েছে বিভিন্ন গেম, চ্যালেঞ্জ ও রেফারেল প্রোগ্রাম। বিনোদনের জন্য গ্রাহকরা মাইজিপি অ্যাপে জাতীয় দলের ক্রিকেট ও ফুটবল ম্যাচ এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা স্ট্রিম করে দেখতে পারবেন। মাইজিপি ব্যবহারকারীরা টেন নেটওয়ার্কের মাধ্যম ইউসিএল ও ইউইএল উপভোগ করতে পারবেন।
এছাড়া বায়োস্কোপ, জি৫, সিনেম্যাটিক এবং অন্যান্য লাইভ টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সিনেমাপ্রেমীরা নতুন সব সিনেমা ও অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন। সুবিধাজনক ইনফিনিটি স্ক্রলের মাধ্যমে এ অ্যাপে লাইভ স্পোর্টস ও বিনোদনের কন্টেন্ট দেখতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। ফলে তাদের আলাদা করে স্ট্রিমিং লিংক খোঁজার ঝামেলা পোহাতে হবে না। এ অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের গেমও খেলতে পারেন।
এছাড়া রয়েছে মোবাইল ব্যালেন্সের মাধ্যমে স্পটিফাই প্রিমিয়াম ব্যবহার করার মতো অসাধারণ ফিচার। এ সঙ্কটকালীন মানুষ তাদের জীবনধারায় নানা পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে এবং মানসিক চাপ কমাতে ও বাস্তবতা থেকে কিছু সময়ের জন্য মুক্তি পেতে পড়ার মধ্যে স্বস্তি খুঁজে নিচ্ছে। এক্ষেত্রেও এগিয়ে মাইজিপি। অ্যাপটিতে একটি ই-বুক লাইব্রেরি রয়েছে যেখানে বিনামূল্যে ও কিনে পড়ার জন্য বইয়ের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের নতুন বিষয় শিখতে ও জ্ঞান আহরণের সুযোগ করে দেবে। এ ই-বুক লাইব্রেরিতে রয়েছে হুমায়ূন আহমেদসহ জনপ্রিয় সব লেখকদের বইয়ের সংগ্রহ।
মাইজিপি অ্যাপ মানুষের ডিজিটাল জীবনযাত্রায় নতুন মাত্রা ও স্বাচ্ছন্দ্য যুক্ত করেছে। বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে জীবনকে সহজ করতে এ অ্যাপে রয়েছে প্রয়োজনীয় নানা ফিচার। যেমন- এর ইভেন্ট অ্যালার্ট ফিচার বিভিন্ন টিকাদান ও মুভমেন্ট পাসের ব্যাপারে তথ্য প্রদান করবে। পাশাপাশি গ্রাহকদের জীবন আরও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক করে তুলতে গ্রামীণফোন বিভিন্ন জনপ্রিয় খাবার ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ও রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের সঙ্গেও পার্টনারশিপ করেছে।
করোনা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন এনেছে। সামাজিক যোগাযোগে ও সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অনেক কিছু নতুন করে আমাদের অনুসরণ করতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারির ফলে বিশ্বব্যাপী যে ডিজিটাল রূপান্তর ঘটেছে সে বাস্তবতায় গ্রাহকদের উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদানে এবং তাদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বৃদ্ধিতে ডিজিটাল জীবনধারায় গ্রাহকরা কীভাবে তাদের অভ্যাস ও চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করছেন তা বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন মানুষের ডিজিটাল জীবনধারার মানোন্নয়নের ধারাবাহিক প্রয়াসের অংশ হিসেবে মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল সম্ভাবনার নানা দিক উন্মোচনে চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহক সেবাদান করে আসছে।
মানুষের পরিবর্তিত ও ক্রমবর্ধমান প্রয়োজন পূরণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের স্বাচ্ছন্দ্যদানে মাইজিপি নতুন নতুন সব ডিজিটাল ফিচার নিয়ে আসছে। দেশজুড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এ অ্যাপের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে পূর্ণাঙ্গ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে মাইজিপি’র রয়েছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সব ফিচার।