রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ ছাড়া সব ধরনের চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিভিন্ন শক্তি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন যেন না হয় সেজন্য পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী।
শনিবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৭০-এর দশকে এবং ৮০’র দশকে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তখন আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। কিন্তু সবশেষ অনেক বেশি রোহিঙ্গা পাঠিয়েছে। তারা (মিয়ানমার) আমাদের বলেছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। কিন্তু মিয়ানমার তার কথা রাখেনি। কিন্তু তারা কখনও বলেনি যে নেবে না। আমি এজন্য আশাবাদী তারা (মিয়ানমার) নেবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ করে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান তুলে ধরেন মোমেন। তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকভাবে আলোচনা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনও সাফল্য পাইনি। দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টা চলছে। আমরা বহুপাক্ষিক ফোরামে বিষয়টা নিয়ে গেছি, সেখানেও অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু এখনও একজন রোহিঙ্গাও যায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুদ্ধ ছাড়া সবকিছু করেছে। আমরা সব অপশন খোলা রেখেছি। আমাদের বিশ্বাস আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করব। আমরা আশাবাদী।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাধা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কারও নাম উল্লেখ না করে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন শক্তি এবং অন্যান্য গোষ্ঠী রোহিঙ্গারা যেন না যায় তার জন্য পাঁয়তারা করছে। ওদের (রোহিঙ্গাদের) বোঝাচ্ছে যে, যেয়ো না। এটা খুব দুঃখজনক। কিন্তু ওদের (রোহিঙ্গাদের) ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে তার নিজের দেশে গেলে। আর অধিকাংশ রোহিঙ্গা তার নিজের দেশে যেতে চায়।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রকল্প নিয়ে চীনের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগেও বিভিন্ন বাধা রয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, পাইলট প্রকল্প করার চেষ্টা করেছি। এখন অনেক লোক ওটার বাধা দিচ্ছে। অনেকে বাধা দিচ্ছে। এটা দুঃখজনক।
অতীতের মতো এবারও প্রত্যাবাসন নিয়ে আশার কথা শোনান মোমেন। তিনি বলেন, আমি সবসময় আশাবাদী। আমি আশা করি, এ সমস্যার সমাধান করতে পারব।
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস বক্তব্য দেন।