রেলওয়ের রানিং ষ্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আহুত রবিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর ট্রেন চালানো বন্ধের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ‘খ’ ও ‘গ’ ধারা বাতিলের দাবিতে রেলসচিবের সঙ্গে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার বৈঠক শেষে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা চলমান আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতারা।
রবিবার বিকেল ৩টা থেকে রেল ভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ন কবীরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান দাবি পূরণের লিখিত আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় আমাদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করা হলো। রেল ও অর্থ মন্ত্রণালয় আলোচনার মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই পেনশনে আগের মতো মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহাল করবেন বলে আমাদের আশ্বস্থ করা হয়েছে। বিগত বছরের ৩ নভেম্বরের আগে যেসব রানিং স্টাফ অবসরে গেছেন তাদেরও আগের নিয়ম অনুযায়ী পেনশন (মাইলেজ ভাতাসহ) সোমবার থেকে নিষ্পত্তির কার্যক্রম শুরু হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সময় মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, রানিং ষ্টাফ কর্মচারী সমিতির সাংগাঠনিক সম্পাদক শাহেদ আলী, গার্ডস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশের ‘খ’ ধারা দ্বারা তাদের অবসরত্তোর পেনশন সুবিধা ও আনুতোষিক খর্ব করা হয়। ‘গ’ ধারা দ্বারা চলমান অর্জিত মাইলেজ এ প্রাপ্ত অর্থ পুরোপুরি না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে যতই মাইলেজ অর্জন হোক না কেন প্রত্যেকের বেসিক এর বেশী অর্থ পাবে না বলে বলা হয়। ‘খ’ ধারার কারণে বর্তমানে অবসরে যাওয়া রানিং স্টাফদের এখন পর্যন্ত ফাইনাল সেটেলমেন্ট হয়নি। ৬ মাস যাবত পিআরএল শেষ হলেও এখন পর্যন্ত তারা পেনশন পাননি। প্রজ্ঞাপনের এই ‘খ’ ও ‘গ’ ধারা রানিং ষ্টাফদের স্বার্থের পরিপন্থি হওয়ায় তারা আন্দোলন শুরু করে।
গত ২৫ জানুয়ারী বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ৫ দিনের মধ্যে দাবী মানা না হলে ৩১ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবে ট্রেনের চালক, গার্ড ও টিটিরা। এই ৫ দিন রেলওয়ের চালক, গার্ড এবং টিটিরা আট ঘণ্টার বেশি ট্রেন না চালিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে মালবাহী ট্রেনসহ বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয় বলে জানা গেছে।