পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউকিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান ঢাকা থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়ি রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালানটি। প্রকল্প এলাকায় গাড়ি বহর প্রবেশ করলে প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি ও রাশিয়ানরা গাড়ি বহরকে স্বাগত জানায়।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরের দিকে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছে। প্রথম চালানের মতোই সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে আমদানিকৃত পারমাণবিক জ্বালানি সড়ক পথে রূপপুরে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশে আরও পাঁচটি চালান আসবে। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জ্বালানি নেওয়া হয় প্রকল্প এলাকায়। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করে। এর মাধ্যমে পারমাণবিক ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বৃহৎ প্রকল্প। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারের ব্যয় ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আর রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। আর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিট চালু হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রথম ইউনিটের ভৌত এবং অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়ে গেছে ৯০ শতাংশের বেশি। আর দ্বিতীয় ইউনিটের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।