আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেতে বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ছাড়া তার সবই পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বিষয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশের ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদনের পর কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের পর্ষদ সভায় তৃতীয় কিস্তির প্রায় ১১৫ কোটি ডলার অনুমোদন হয়। এর মধ্যে এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) ও এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) ৯২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির ২২ কোটি ডলার রয়েছে।
কান্ট্রি রিপোর্টে বলা হয়, আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী গত ডিসেম্বর নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ডিসেম্বর শেষে প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের জন্য প্রাথমিকভাবে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রিজার্ভে বড় ধরনের উন্নতি না হওয়ায় বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তা কমানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি।
অন্যান্য শর্তের বিষয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর নাগাদ কর রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। আদায় করেছে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬০ কোটি টাকা।
ঋণের আরেকটি শর্ত ছিল, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের বাজেট ঘাটতি যেন ৯০ হাজার ৫২০ কোটি টাকার বেশি না হয়। কান্ট্রি রিপোর্ট অনুসারে, চলতি অর্থবছরের ওই সময় পর্যন্ত কোনো ঘাটতি তো ছিলই না, বরং ৪৭ হাজার ৫৪০ কোটি টাকার উদ্বৃত্ত ছিল।
অগ্রাধিকারভিত্তিক সামাজিক ব্যয়ে ডিসেম্বর নাগাদ ৩০ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল। ব্যয় হয়েছে ৫৫ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। অর্থবছরের ছয় মাসে সরকারের মূলধনি ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ২২ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। ব্যয় হয়েছে ৩৫ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়া রিজার্ভ মানি ও বিদেশি ঋণের বকেয়া সম্পর্কিত যেসব লক্ষ্যমাত্রা ছিল, সেগুলোও পূরণ করা হয়েছে।