রাসায়নিক অস্ত্রের সর্বশেষ মজুদটি ধ্বংস করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এটাকে একটি মাইলফলক বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। এর মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার রাসায়নিক সংঘাতের একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হচ্ছে।
কেন্টাকিতে ব্লু গ্রাস আর্মি ডিপোতে নিয়োগকৃত কর্মীরা শুক্রবার জিবি নার্ভ এজেন্টের রকেট ধ্বংস করে। এগুলো মূলত সারিন নামে পরিচিত। শীতল যুদ্ধ শেষ হলে মোট ৩০ হাজার টনেরও বেশি রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ নির্মূল করার জন্য এক দশকব্যাপী প্রচারণা চলে।
এখন মার্কিন কর্তৃপক্ষ ওই রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস করার ফলে ওই প্রচারণা সফল হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, কয়েক দশকের পুরোনো রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিন দশকের পুরোনো কেমিক্যাল ওয়েপন্স কনভেনশনের অধীনে আওতাধীন একটি প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ হিসেবেই এমনটা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আজ আমি এই ঘোষণা করতে পেরে গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র সেই মজুতের সব অস্ত্রশস্ত্র নিরাপদে ধ্বংস করেছে। রাসায়নিক অস্ত্রের ভয়াবহতা থেকে মুক্ত বিশ্বের এক ধাপ কাছাকাছি এসেছি আমরা।
রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে শেষ রাষ্ট্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যারা রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছিল। তবে ধারণা করা হয় যে কিছু দেশে এখনও গোপনে রাসায়নিক অস্ত্র মজুত রয়ে গেছে।
কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাস্টার্ড গ্যাস, ভিএক্স ও সারিন গ্যাসবাহী প্রজেক্টাইল, রকেটসহ বিভিন্ন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে শক্তিশালী দেশগুলো এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করায় ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেয় এবং অস্ত্রগুলো নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। তবে সমালোচনার পরও অনেক দেশই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়েও এসব অস্ত্রের ব্যবহার চালিয়ে গেছে।
রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে ১৯৯৩ সালে কেমিক্যাল ওয়েপনস কনভেনশনে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয় বিভিন্ন দেশ। ১৯৯৭ সাল থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়।