রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ মর্মগতভাবে নিষেধাজ্ঞা এবং অন্য কোনো দেশে অস্থিতিশীলতা বয়ে আনে— এমন উসকানি প্রদানের বিরোধী। মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরাপীয় মিত্রদের কটাক্ষ করে এই কথা বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ভৌগলিক আয়তনের বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জোটের সাংহাই কো-অপরারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়ে পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া সবসমই নিষেধাজ্ঞা, উসকানি এবং নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে অন্য রাষ্ট্রকে চাপে রাখার বিরোধী। বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার অবস্থান এটাই এবং ভবিষ্যতেও এই অবস্থানেই থাকবে রাশিয়া।’
গত জুনের শেষ দিকে ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ সেনাবাহিনীর প্রধান সহযোগী ও বেসরকারি যোদ্ধা সংস্থা পিএনসি ওয়াগনারের বিদ্রোহ সামাল দেওয়ার পর এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুরু হয়েছে এসসিও জোটের সম্মেলন। জোটের অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবারের সম্মেলনের সভাপতি।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আফগানিস্তান পরিস্থিতি এবারের এসসিওর বৈঠকের কয়েকটি আলোচ্যসূচি। তবে এসব ইস্যূকে ছাপিয়ে গিয়েছে বৈঠকে পুতিনের উপস্থিতির ব্যাপারটি।
২০০১ সালে গঠিত হয় সাংহাই কো-অপরাশন অর্গানাইজেশন জোট। চীন, রাশিয়া ও মধ্যে এশিয়া অঞ্চলের দেশ কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান ,উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এই জোটের প্রতিষ্ঠাকালীন সদ্য। পরবর্তী বিভিন্ন বছরে এই জোটের সদস্যপদ পেয়েছে তুরস্ক, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, মিশর, কাতার, কুয়েত, মালদ্বীপ, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ। ভারত ও পাকিস্তান এই জোটের সদস্য হয়েছে ২০১৭ সালে।
এখানে লক্ষ্যনীয় একটি ব্যাপার হলো— ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রতি নিন্দা জানিয়ে বেশ কয়েকট প্রস্তাব (রেজোল্যুশন) উত্থাপন করেছে জাতিসংঘ। কিন্তু সাংহাই কো-অপরারেশন অর্গানাইজেশনের কোনো সদস্যরাষ্ট্র সেসব রেজোল্যুশনে রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়নি; হয় পক্ষে ভোট দিয়েছে নয়তো ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে এসসিওর সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমি এসসিও জোটের সব সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ তারা নাগরিকদের জীবন ও সাংবিধানিক নিরাপত্তা রক্ষায় রাশিয়ার নেতৃত্ব যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।’