ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি কমিয়ে দিলেও তার ঠিক উল্টো পথে তুরস্ক। রুশ জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বদলে কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। চলতি বছর রাশিয়া থেকে দ্বিগুণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে তুরস্ক, যা মস্কোর ইউরোপীয় বাজার হারানোর ক্ষতি খানিকটা হলেও পুষিয়ে দিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
গত ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা সংস্থাগুলো রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গোটাতে শুরু করে। কিন্তু তখন থেকেই তুরস্ক-রাশিয়ার বাণিজ্য উল্টো বাড়তে থাকে।
রেফিনিটিভ এইকনের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত দৈনিক দুই লাখ ব্যারেলের বেশি রুশ তেল আমদানি করেছে তুরস্ক। রাশিয়ার ইউরালস ও সাইবেরিয়ান লাইট উভয় ধরনের তেলই কিনেছে তারা। অথচ গত বছর একই সময়ে তুরস্কের রুশ তেল আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক মাত্র ৯৮ হাজার ব্যারেল।
ইউরোপের দাবি মেনে তুরস্ক রাশিয়ার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দিতে রাজি হয়নি। তাদের রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতাও কমেনি। চলতি মাসের শুরুর দিকে মুখোমুখি বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়াতে সম্মত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
রেফিনিটিভের তথ্য বলছে, তুরস্কের তুপ্রাস এবং স্টার শোধনাগারে এ বছর রাশিয়ার ইউরাল ও সাইবেরিয়ান লাইট তেল গ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপরীতে উত্তর সাগর, ইরাক ও পশ্চিম আফ্রিকান তেল কেনা কমেছে।
রুশ তেলের দাম বাড়তি থাকায় স্টার শোধনাগার কয়েক বছর ধরে নরওয়ের জোহান সভারড্রুপ ও ইরাকি তেল কেনা বাড়িয়েছিল, যার মান ইউরালের মানের কাছাকাছি। তবে চলতি বছর রাশিয়ার তেলের দাম আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণে কমেছে আর বেড়েছে উত্তর সাগর ও ইরাকি তেলের দাম।
রেফিনিটিভ এইকনের তথ্যমতে, স্টার শোধনাগার এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার ব্যারেল রুশ তেল কিনেছে। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল দৈনিক মাত্র ৪৮ হাজার ব্যারেল।
আর ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত তুরস্কের তুপ্রাস শোধনাগার দৈনিক ১ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল রুশ তেল কিনেছে। অথচ গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল দৈনিক ৪৫ হাজার ব্যারেল মাত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এক তেল ব্যবসায়ী বলেন, তুরস্কের পরিশোধকদের জন্য রাস্তাটি স্পষ্টই ছিল। কারণ রাশিয়ার তেল কেনায় তাদের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
এ বিষয়ে তুরস্কের জ্বালানি মন্ত্রণালয়, তুপ্রাস বা সোকার কারোরই মন্তব্য পাওয়া যায়নি।