রাশিয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ ফিরে আসা, রাশিয়ায় ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণের পরিবেশকে তুলে ধরেছে বলে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে সমরিক প্রশিক্ষণ সেপ্টেম্বরে বাধ্যতামূলক করা হয়। রাশিয়া গত ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য একই ধরনের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের ঘোষণা দেয়। খবর ভয়েস আমেরিকার
রুশ স্কুলে সামরিক পাঠক্রমের প্রত্যাবর্তন নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা খুব সম্ভবত উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাব ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে’ ফিরে যাওয়া। সেই সময় স্কুলগুলোতে এ ধরনের সামরিক পাঠ্যক্রম চালু ছিল।
শনিবার পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়।ইউক্রেনীয় বাহিনী পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় রুশ সৈন্যদের সাথে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত হয়।ওই এলাকাগুলোতে মস্কো কিয়েভের জন্য আধুনিক ট্যাংক সরবরাহের পশ্চিমা প্রতিশ্রুতির মধ্যে তড়িঘড়ি আক্রমণ শুরু করে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি, তার দেশকে এটিএসিএমএস নামে পরিচিত, লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে এই পরিস্থিতিকে পশ্চিমা অংশীদারদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছেন।
জেলেন্সকি শনিবার রাতে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারি, তাহলে এই রুশ সন্ত্রাস বন্ধ করা সম্ভব হবে।’
এর আগে জেলেন্সকি বলেছিলেন, ভুহলেদার এবং বাখমুতের বড় ধরনের যুদ্ধ চলছে। রুশ গোলন্দাজদের লাগাতার গোলাবর্ষণে শহরগুলো কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।
আঞ্চলিক গভর্নর পাভলো কিরিলেনকো টেলিগ্রামকে বলেন, দোনেৎস্কের কোস্তিয়ান্তিনিভকা শহরে একটি আবাসিক এলাকায়, রুশ হামলায় ৩ জন নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন।
কিরিলেঙ্কো বলেন, চারটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন এবং একটি হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।উদ্ধারকারী ও পুলিশ কর্মকর্তারা ‘রুশ দখলদারদের আরেকটি অপরাধ সতর্কতার সাথে নথিভুক্ত করার জন্য’ ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
কোস্তিয়ান্তিনিভকা শহরটি যুদ্ধরেখা থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক দূরে হওয়া সত্বেও ক্রমাগত শ্রত্রুর আক্রমণের শিকার হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে কিরিলেনকো বলেন, ‘রাশিয়ার বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। কারণ তারা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম নয়।’
শনিবারের হামলাটি ইউক্রেনের বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রুশ বাহিনীর ধারাবাহিক হামলার সর্বশেষ ঘটনা।আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এমন হামলার মধ্য দিয়ে মস্কো কোন সমাধানের উদ্যোগকে দুর্বল করতে চাইছে।
ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান ওলেক্সি ড্যানিলভ আরএফই/আরএলকে বলেছেন, মস্কো ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসনের বার্ষিকীতে নতুন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন, আবারও ইউক্রেনের প্রতি ইইউ-এর নিঃশর্ত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।
শনিবার জার্মানির ডুসেলডর্ফে ভন ডের লেয়েন বলেন, ‘দ্বিধাহীনভাবে আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।’
ক্রেমলিন ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদেশগুলোর সংহতির সর্বশেষ ইঙ্গিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।