রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধাদের সংগঠন ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি গত জুন মাসে একটি ব্যর্থ বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেওয়ার আগে পর্যন্ত রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র ছিলেন। তার মৃত্যুর পর ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রে জোন চ্যানেল বলেছে, প্রিগোশিন রাশিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার পদক্ষেপের ফল স্বরূপ মারা গেছেন।
এ ভাড়াটে যোদ্ধাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও বলা হচ্ছে, ওয়াগনার প্রধানের ব্যক্তিগত বিমানটিকে গুলি করে ভূ-পাতিত করেছে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
যদিও রাশিয়ার ভেতরে এবং বাইরের অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, এই বিদ্রোহটি আসলে সাজানো ছিল এবং প্রিগোশিন মস্কোর দিকে তার “ন্যায় যাত্রা” প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরাসরি নির্দেশ পাওয়ার পরই বাতিল করেছিল।
বুধবার রাজধানী মস্কোর উত্তর-পশ্চিমের টিভের এলাকায় বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনাটি একই দিনে ঘটে যে দিন রুশ জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে বিমান বাহিনীর প্রধানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
জেনারেল সুরোভিকিনের সঙ্গে প্রিগোশিনের ভালো সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায় এবং বিদ্রোহের পর তাকে আর জন সমক্ষে দেখা যায়নি।
রাশিয়ার রোসাভিয়াতসিয়া বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, প্রিগোশিনের বিমানটি ছিল একটি এমব্রায়ার ১৩৫, যেটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে যাচ্ছিল। বিমানটিতে সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রু ছিল।
তারা জানায়, ২০১৪ সালে ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও সিনিয়র কমান্ডার দিমিত্রি উৎকিনও ওই বিমানের যাত্রীদের তালিকায় ছিলেন।
বিমানটি কুঝেনকিনো নামে একটি গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হয়। এই গ্রামটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে যেতে অর্ধেক পথ পেরোনোর পরই অবস্থিত।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ৬২ বছর বয়সী প্রিগোশিনের লাশ খুঁজে পাওয়া গেছে এবং শনাক্ত করা হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, ১০টি মরদেহের মধ্যে সবগুলোই উদ্ধার করা হয়েছে।
ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রে জোন চ্যানেল বলছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে স্থানীয় বাসিন্দারা দু‘টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে এবং তারা দু’টি জায়গায় ধোঁয়া দেখতে পেয়েছে।
সংবাদ সংস্থা তাস বলেছে, বিমানটি মাটিতে পরার পর তাতে আগুন ধরে যায়।
তারা জানায়, বিমানটি প্রায় আধা ঘণ্টারও কম সময় ধরে আকাশে উড়েছে।
বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে এবং জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল তল্লাশি করে দেখছে।
একইসাথে গ্রে জোন জানিয়েছে যে প্রিগোশিনের মালিকানাধীন দ্বিতীয় আরেকটি বিমান মস্কো এলাকায় নিরাপদে অবতরণ করেছে