ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়াকে সাবধান করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
মূলত পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিকে এই হুঁশিয়ারি দিলো যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বুধবার জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা উত্তর কোরিয়াকে রাশিয়ার সাথে অস্ত্র আলোচনা বন্ধ করার এবং পিয়ংইয়ং ইতোপূর্বে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র সরবরাহ বা বিক্রি না করার জন্য যে প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি।’
কিরবি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু উত্তর কোরিয়া সফর করার সময় কিম জং উনের সাথে দেখা করে পিয়ংইয়ংকে মস্কোর কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করার চেষ্টা করেছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে।
অবশ্য মার্কিন কর্মকর্তারা কীভাবে এই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছেন তা বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন হোয়াইট হাউসের এই মুখপাত্র।
টানা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
অপরদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে সহায়তা না করতে চীনসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে সতর্ক করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের এই বক্তব্য এমন সময়ে সামনে এলো যখন কয়েক সপ্তাহ আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উন তাদের দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চিঠি বিনিময় করেছেন।
পুতিন সেই সময় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে, আমরা দুই দেশের জনগণের কল্যাণ ও কোরীয় উপদ্বীপ এবং সমগ্র উত্তর-পূর্ব এশিয়ার দৃঢ় স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সকল ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করব।’
এর আগে গত বছর উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়াকে গোপনে আর্টিলারি শেল পাঠানোর অভিযোগ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার কিরবি বলেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন … ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে সামরিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করছে উত্তর কোরিয়া।’
এসময় ‘নতুন তথ্যের’ উদ্ধৃতি দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে এই ধরনের আলোচনা অগ্রসর হচ্ছে বলেও জানান তিনি। কিরবির ভাষায়, ‘আগামী মাসগুলোতে এই বিষয়ে উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে।’
এ বিষয়ে জানতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ান মিশনের সঙ্গে বার্তাসংস্থা রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে।
অবশ্য উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া উভয়ই এর আগে অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উত্তর কোরিয়া অবশ্য ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর ‘আধিপত্যবাদী নীতি’ মস্কোকে তার নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।