আগামী শনিবার ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই সময়কালে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে না পারলেও প্রবল চাপ বজায় রেখেছে। বিশেষ করে মার্কিন সহায়তা থমকে যাওয়ায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সম্প্রতি গোলাবারুদ ও অস্ত্রের অভাবে বেকায়দায় পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞা চাপানোর তোড়জোড় চলছে। খবর ডয়চে ভেলের
জি-সেভেনের বর্তমান সভাপতি দেশ ইতালির পক্ষ থেকে ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা জগতের অবিচ্ছেদ্য সহায়তার দাবি করা হয়েছে। পশ্চিমা জগত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, এমন দাবি অস্বীকার করছে জি-সেভেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক সহায়তায় বিলম্বের কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাশিয়া হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও শিল্পক্ষেত্রের একাধিক পণ্য যোগ করা হবে। সে দেশের অর্থনৈতিক রাজস্বের কিছু উৎসও বন্ধ করা হবে।
এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, ইউক্রেনের যুদ্ধের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞার নতুন প্যাকেজের প্রস্তুতি আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। নাভালনির মৃত্যুর কারণে সেই পদক্ষেপ আরো জোরালো করা হচ্ছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সমন্বয় করে চলেছে বাইডেন প্রশাসন। এর আওতায় সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দাগিরি সংক্রান্ত উপ মন্ত্রী ব্রায়ান নিলসন চলতি সপ্তাহে ইউরোপ সফর করছেন। জার্মানি, বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে তিনি নতুন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতে উৎপাদন কমাতে এমনকি তৃতীয় কোনো দেশের উপরেও সহায়তার দায়ে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।
দুই বছর ধরে যাবতীয় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া যেভাবে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়িয়ে ইউক্রেনের উপর লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে। সে দেশের অর্থনীতিও নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা মোটামুটি সামলে উঠেছে। পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদের রফতানির মাধ্যমে রাশিয়ার আয়ের পথও খোলা আছে। ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ থেকে মস্কো এমনকি অস্ত্রও আমদানি করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে।