অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল এবং পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনকে তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তিন দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে প্রশাসন ভবন অবরোধ এবং অকৃতকার্য হয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ছবি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন তারা।
কর্মসূচিতে রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, যেখানে একজন শিক্ষার্থীকে রাত-দিন পরিশ্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হচ্ছে সেখানে একজন অযোগ্য শিক্ষার্থী শুধুমাত্র বাবা-মায়ের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এটা স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়া যায় না। রাষ্ট্রপতি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে মেধার ভিত্তিতে। প্রশাসন যুক্তি দেখায় কোটার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীর ক্ষতি হচ্ছে না, কিন্তু কোন যুক্তিতে আপনি পোষ্য কোটা রেখেছেন সেটার উত্তর দেন। এই শিক্ষকরা যদি সন্তানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ডোবাতে পারে, সন্তানের জন্য তারা দেশের মানও ডোবাতে পারে। এই শিক্ষকদের ন্যূনতম নৈতিকতাবোধ নেই।
মানববন্ধনে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এখন পারিবারিক গোয়ালঘরে রুপান্তরিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী যেখানে ৮৫ নাম্বার পেয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে সেখানে ১৯ নাম্বার পেয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীরাও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তার অযোগ্য সন্তানদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা হবে না। আপনার আগের ভিসি পুলিশ পাহারায় পালিয়ে গেছে। কিন্তু এখন পালানোর সুযোগ নেই।
রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয় কে নিজেদের সম্পত্তি মনে করেন। তারা মনে করে এখানে পড়ালেখা করা চাকরি পাওয়া তাদের সন্তানদের মৌলিক অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান হয়ে জন্ম নিলেই যেন পরবর্তীতে সে শিক্ষক হবে, সে যত অযোগ্যই হোক। বর্তমানে দেশ যে ধ্বংসের দারপ্রান্তে এর দায় এই শিক্ষকদের নিতে হবে। যদি তিন দিনের মধ্যে তাদের ভর্তি বাতিল এবং পোষ্য কোটা বাতিল না করা হয় তাহলে প্রশাসন ভবন অবরোধ এবং অকৃতকার্য হয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ছবি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ মুহিব, সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ প্রমুখ। এসময় বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।