রাজবাড়ীতে রাজু মন্ডল নামে এক কিশোরকে অপহরণের ১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আব্দুল্লা আল মামুন নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপহরণ হওয়া কিশোর রাজু মন্ডল (১৪) রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বারোবাকপুর গ্রামের হাছেন মণ্ডলের ছেলে। রাজু স্থানীয় বারোবাকপুর হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্র।
অপহরণকারী আদুল্লা আল মামুন ফরিদুপুর জেলার মধুখালী উপজেলার বামনদি গ্রামের মিজানুর শেখের ছেলে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজুর ভাইসহ কয়েকজন ও ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় রাজুকে ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে অপহরণকারী আব্দুল্লা আল মামুনসহ তিন-চারজন রাজুদের বাড়িতে এসে রাজুর মাদরাসার শিক্ষকের কথা বলে তাকে আলীপুর প্রধান সড়ক থেকে বাসে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বাসে তুলে ফরিদপুরের দিকে যায়। দুপুরের দিকে রাজুর মা রেহানা বেগমকে ফোন করে অপহরণকারীরা তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানায়। এরপর তারা বলে, ‘ছেলেকে নিতে হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে’।
এ সময় ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে তাকে নিয়ে ঘুরতে থাকে অপহরণকারীরা। রাজুর মা তাদের পারিবারিক অবস্থা খুব খারাপ জানিয়ে টাকার অঙ্ক কমিয়ে নিয়ে তার ছেলেকে ছেড়ে দিতে বলে। পরে তারা অন্য আর একটি নম্বর থেকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তার সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ও বকাঝকা করে। এরপর অন্য আরেকটি নম্বর থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে ছেলেকে নিয়ে যেতে বলে। পরে তাদের মোবাইল ফোন নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
শিশু রাজু মণ্ডলের বড় ভাই রায়হান মন্ডল বলেন, তার ভাইকে অপহরণের পর রোববার সদর থানায় অভিযোগকরা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ওইদিন দিবাগত রাত ১টার দিকে অপহরণকারীরা চাঁদা দাবি করে আবার ফোন করে। তারা ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে টাকা নিয়ে যেতে বলে। এ সময় ফোন পেয়ে তারা চারজন ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় মুসলীম মিশন এলাকা থেকে রাজুকে উদ্ধার ও অপহরণকারী মামুনকে গ্রেপ্তার করে রাজবাড়ীতে আনা হয়। অপহরণকারী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ কয়েকজনের নামে তার বাবা হাছেন মন্ডল বাদী হয়ে সদর থানায় অপহরণ ও চাঁদা দাবির মামলা দায়ের করেছেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, রাজু মন্ডল নামে এক কিশোরকে অপহরণের অভিযোগে তাকে ফরিদপুর পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিশোর রাজুর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামুনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।