রেলওয়ের কোচ ও ওয়াগন মেরামতের লক্ষ্যে রাজবাড়ীতে একটি ওয়ার্কশপ নির্মাণের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। বুধবার বিকালে রেলভবনে এ চুক্তিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ কুদরাত ই খুদা এবং কনসালটেন্ট এর পক্ষে স্বাক্ষর করেন সিস্ট্রার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারি সোমাল রাজু ।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘বাংলাদেশের রেলওয়েতে দুই ধরনের গেজ ব্যবস্থা বিদ্যমান। মিটার গেজ ও ব্রডগেজ। মিটারগেজকে পর্যায়ক্রমে আমরা ব্রডগেজে রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি। উন্নত বিশ্বে সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব হিসেবে রেলওয়ে যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে, আমাদের রেল ব্যবস্থা এখনো সেভাবে গড়ে তুলতে পারিনি। আমাদের দেশে রেল ব্যবস্থা এখনো ডিজেল চালিত অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রায় পুরোটা বিদ্যুৎ চালিত ট্রেন।’
রেলপথমন্ত্রী বলেন, ‘রাজবাড়ীতে এই কারখানা করার ফলে আমাদের বহরের বিদ্যমান ও ভবিষ্যতে যে কোচ ও ওয়াগনগুলো যুক্ত হবে, এখান থেকে মেরামত করতে পারব । পদ্মা সেতুর রেল সংযোগের ফলে রাজবাড়ীর সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে এখান থেকে কোচ এবং ওয়াগন মেরামত করে সারা দেশে চালানো সম্ভব হবে। প্রতিটি জেলায় রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে।’
নতুন করে রেল ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার দশটি প্রকল্পের মধ্যে দুটি রেলওয়েতে চলমান আছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প।
ভারতের সঙ্গে আটটি ইন্টার সেকশন পয়েন্টের মধ্যে পাঁচটি চালু করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যাতায়াত সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কলকাতা, শিলিগুড়ির মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু আছে। আমাদের দেশের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করার জন্য পর্যায়ক্রমে সকল সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইনে রূপান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছি। জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী, খুলনা থেকে দর্শনা, ঈশ্বরদী থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ীর ওয়ার্কশপ নির্মাণের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের সিস্ট্রা কাজ করবে। আগামী ১৬ মাসের মধ্যে তারা বিস্তারিত নকশাসহ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিড ডকুমেন্ট প্রস্তুত করবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।