পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর হাটগুলোতে আজ শনিবার থেকে পশু কেনাবেচা শুরু হচ্ছে। এসব পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২১ জুলাই ঈদের দিন পর্যন্ত কেনাবেচা চলবে। এবার ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটসহ আটটি এবং দক্ষিণ সিটি এলাকায় ১০টিসহ ঢাকায় মোট ১৮টি অস্থায়ী পশুর হাট বসছে। এর বাইরে উত্তর সিটি এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাট এবং দক্ষিণ সিটি এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটেও কোরবানির পশু বেচাকেনা চলবে।
এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার সারা দেশে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। খামারি ও ক্রেতাসাধারণকে কোরবানির পশু অনলাইনে ক্রয়-বিক্রয়ের অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর সিটি এবারও ডিজিটাল পশুর হাট চালু রেখেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হাট বসানো হলেও অনলাইন হাটকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনার জন্য ইজারাদারদের বলা হয়েছে। আমরাও এরই মধ্যে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। পশুর হাটগুলো মনিটরিং করার জন্য ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটিতে ১২ জন কাউন্সিলর ছাড়াও ডিএনসিসির দুজন ভেটেরিনারি কর্মকর্তা রয়েছেন।’
মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি হাটেই শক্তি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১০০ প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক, ২০০ গেঞ্জি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক মাস্ক দেওয়া হবে। এ ছাড়া ইজারাদারদের পক্ষ থেকে সব হাটেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। প্রত্যেকটি হাটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা এবং তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হবে।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে বজায় রাখতে হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হাটগুলোর প্রবেশ ও বাহির পথ আলাদা থাকতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা হবে।’
দক্ষিণ সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ‘হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে অস্থায়ী হাটের ইজারাদারদের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এসব শর্ত ভঙ্গ করলে ইজারাদারদের ইজারা বাতিল করা হবে।’
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে এবার ১৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা তিনটি হাট বাতিল করে ১০টি জায়গায় অস্থায়ী হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দক্ষিণ সিটির অস্থায়ী হাটগুলো হলো- হাজারীবাগ এলাকার ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই, এফ, জি, এইচ, সেকশন ১ ও ২-এর খালি জায়গা, গোলাপবাগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মার্কেটের পেছনের খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা এবং লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।
অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের যে নয়টি এলাকায় অস্থায়ী হাট বসানো হচ্ছে, সেগুলো হলো- বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক-ই, সেকশন-৩ এর খালি জায়গা, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ নম্বর সেকশনে (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গা, উত্তরখান মৈনারটেক শহীদ নগর হাউজিং (আবাসিক) প্রকল্পের খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) অস্থায়ী পশুর হাট, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়ক সংলগ্ন রাজধানী হাউজিং, স্বপ্নধারা হাউজিং ও বছিলা গার্ডেন সিটির খালি জায়গা এবং ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশের সালাম স্টিল লিমিটেড ও যমুনা হাউজিং কোম্পানি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন খালি জায়গায় পশুর হাট বসানো হবে।