রাজধানীতে আজ বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ। বিকেলে সমাবেশের সময় হলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। সড়কে আজ অন্য দিনের চেয়ে গাড়িও কম। তবে মানুষের সমাগম বেশি হওয়ায় সমাবেশ এলাকার আশপাশে তীব্র যানজট দেখা যায়।
বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর পল্টন, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
আজ বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ শুরু হবে। অন্যদিকে বিকেল ৩টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট সংলগ্ন স্থানে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে আওয়ামী লীগ। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল একই দিনে কাছাকাছি স্থান ও সময়ে সমাবেশ ডাকায় সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার সড়কে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি কম দেখা গেছে। তারপরও বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যায়। এ জন্য যারা কাজে বের হয়েছেন তারা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
বিএনপির সমাবেশ দুপুর দুইটার দিকে হওয়ার কথা থাকলেও ১০টার পর থেকে তাদের নেতাকর্মী জড়ো হতে থাকে। ১২টার পর ওই এলাকার প্রতিটি অলিগলিতে নেতাকর্মীদের কারণে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারছিল না। সমাবেশের যোগ দিতে একের পর এক মিছিল সড়ক দখল করে নয়াপল্টনের দিকে যাচ্ছিল। এতে যারা প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছেন তারা নিজের গাড়ি রেখে হেঁটেও যেতে পারছিলেন না। অনেকেই গণপরিবহনে বসে থেকে দীর্ঘ অপেক্ষা করে হাঁটতে দেখা যায়।
পল্টন-নাইটিংগেল মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে অন্য সময় মোটরসাইকেলে যানজটসহ ১০ মিনিট লাগলেও এদিন এক ঘণ্টায়ও যাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তাজুড়ে মানুষ আর সমাবেশকে কেন্দ্র করে আসা নেতাকর্মীদের মিছিলের কারণে একই জায়গায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রত্যেককেই।
আওয়ামী লীগের সমাবেশেও লোকজন আসা শুরু করেছে। দুই সমাবেশে আসা মানুষের কারণে ওইপথে প্রায় গাড়ি চলাচল বন্ধই হয়ে গেছে। ফলে এর প্রভাব পড়েছে অন্য সড়কেও। শান্তিনগর-মৌচাক থেকে রাজারবাগমুখী সড়কে গাড়ি চলছে না। গুলিস্তান থেকে পল্টনমুখী গাড়ি চলাচল বন্ধই একরকম। প্রেসক্লাবের সামনে দিয়েও চলছে থেমে থেমে।
স্বাধীন পরিবহনের বাস থেকে কাজিম উদ্দিন নামের যাত্রী প্রেসক্লাবের সামনে নেমে হাঁটা ধরেন। ওই যাত্রী যাবেন শাহবাগে একটি হাসপাতালে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, মতিঝিল থেকে এ পর্যন্ত আসতে দেড় ঘণ্টা লেগেছে। এখন হেঁটে যাব। সড়কে মানুষের কারণে, মিছিলের কারণে গাড়ি চলতে পারছে না। আমার রোগীকে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় রেখেছি এখন বাধ্য হয়ে হেঁটে রওনা দিলাম।
এসময় আরও অনেক যাত্রীকে হেঁটে যেতেও দেখা যায়। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বিরক্তি প্রকাশ করেন অনেকেই। কারওয়ান বাজার ফার্মগেট এলাকায় তেমন একটা যানজট দেখা যায়নি। তবে অন্য দিনের চেয়ে গাড়ি কম দেখা যায়। সদরঘাট, গুলিস্তান এলাকার দিকে গাড়ি যাচ্ছে কম। একই ভাবে ওদিক থেকেও এই সড়কে চলাচল করা গাড়ি বের হয়েছে কম।
গুলিস্তান-মিরপুর সড়কে চলা বিকল্প পরিবহনের এক চালক ঢাকা মেইলকে বলেন, আজ সমাবেশ অনেক মালিক বলেছে সড়কে আজ না চলাই ভালো। এতে অনেকে গাড়ি বের করেনি।
সড়কে গাড়ি কম থাকায় মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট এলাকা বেশ ফাঁকা আছে।
এদিকে যানজট এলাকায় পুলিশ কাজ করলেও বেশি মানুষের চাপে হিমশিম খাচ্ছে। তবে সমাবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।