মঙ্গলবার থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনের ঐতিহাসিক ম্রাউক ইউ শহরে কয়েক দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর সোমবার সকালের দিকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি)-৩৭৮’র সদরদপ্তরের দখল নিয়েছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ম্রাউক ইউ শহরে জান্তা বাহিনীর এলআইবি-৫৪০ এর সদরদপ্তরের দখল এবং এলআইবি-৩৭৭ ঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান আর্মি। রাখাইনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই তিনটি ব্যাটালিয়ন ম্রাউক ইউ শহরের ঐতিহাসিক রাজধানী, ম্রাউক ইউ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, শহরের আবাসিক এলাকা এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে।
আরাকান আর্মি বলেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি কিয়াকতাও শহরে এলআইবি-৩৭ সদরদপ্তর এবং মিনবিয়া, কিয়াকতাও ও ম্রাউক ইউ শহরের অন্যান্য জান্তা ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালিয়েছে যোদ্ধারা।
বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, আকাশ ও সমুদ্র থেকে জান্তা বাহিনীর বোমাবর্ষণের মাঝেই রাথেডং, পোন্নাগিউন, রামরি এবং অ্যান শহরে সংঘর্ষ চলছে। মংডু শহরের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া টাং পিয়ো সীমান্ত ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে আরাকান আর্মি। রোববার ও সোমবার প্রায় ৯০ জন জান্তা সৈন্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
যদিও মঙ্গলবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর মোট ২৬৪ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
সোমবার মিয়ানমার থেকে ছোড়া কামানের গোলায় বান্দরবানে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কামানের গোলায় প্রাণহানির এই ঘটনায় মিয়ানমারের জান্তাকে দায়ী করেছে আরাকান আর্মি।
গত ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরজুড়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে দেশটির এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আরাকান আর্মি বলেছে, রাখাইনের রাজধানী সিত্তের কাছের পাউকতাও শহর এবং পুরো পালেতওয়াসহ অন্যান্য এলাকায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৭০টি অবস্থান দখল করেছে তাদের যোদ্ধারা।