রংপুরের পীরগঞ্জে কৃষক রাজা মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ৮ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় মামলা থেকে ১৯ আসামি খালাস পেয়েছেন।
বুধবার (২২ জুন) বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক মো. তারিখ হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর এলাকার মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে আনছার আলী, শামসার আলী, একই এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে আবু সায়েম, মফিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল লতিফ, আব্দুস ছাত্তারের ছেলে শাহ আলম, হোসেনপুর এলাকার আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে আল আমিন, মিনাজ মিয়ার ছেলে বাদশা মিয়া, আনছার আলীর ছেলে আনিছার রহমান।
আদালতের মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ মে বিলের জমির আইলের বাঁধ নির্মাণ নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের কৃষক রাজা মিয়ার সঙ্গে আসামিদের বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসামিরা লাঠি, ছুরি ও বল্লমসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজা মিয়ার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আনছার আলী বাদী হয়ে ২৯ আসামির নাম উল্লেখ করে পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচারকাজ চলে। মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। বুধবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া মামলা চলাকালীন তিন আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। অন্যদিকে ১৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) নয়নুর রহমান টফি বলেন, দেরিতে হলেও বাদীপক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রশীদ চৌধুরী ও এমদাদুল হক জানান, এ রায়ের কপি হাতে পেলে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।