রংপুরে দুই মাস আগে আত্মহত্যা করা এক স্কুলছাত্রীর অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। এতে ওই স্কুলছাত্রীর প্রেমিক হাফিজুর রহমানকে (২৮) আসামি করা হয়েছে। বুধবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ওই স্কুলছাত্রীর সরলতার সুযোগ নিয়ে গোপনে ধারণা করা অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁসের ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলিউর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ওই ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় হাফিজুর রহমানের প্ররোচনা রয়েছে বলে জানা গেছে। আত্মগোপনে থাকা হাফিজুরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে সনাতন ধর্মের ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন লোহানীপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ী বানিয়াপাড়ার হাফিজুর রহমান। তিনি পেশায় কনফেকশনারি ব্যবসায়ী। ওই ছাত্রীর পারিবারিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে হাফিজুর তার এক বন্ধুকে দিয়ে তাদের দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করেন প্রেমিক হাফিজুর।
এ ঘটনায় মানসিক চাপে গত ৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী নিজ বাড়িতে কীটনাশক সেবন করে আত্মহত্যা করে। তড়িঘড়ি করে ময়নাতদন্ত শেষে স্থানীয় শ্মশানঘাটে তার মরদেহ দাহ করা হয়। ওই সময় তার পরিবার ও এলাকার মানুষ আত্মহত্যার আসল কারণ জানতে পারেনি।
সম্প্রতি ওই ছাত্রীর সঙ্গে হাফিজুর রহমানের ৪ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁস হয়। এতে এলাকার মানুষের কাছে আত্মহত্যার রহস্য নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে নড়ে চড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন।
এদিকে প্রভাবশালী হাফিজুর রহমানের হুমকি ধমকিতে ওই স্কুলছাত্রীর অসহায় মা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। পরে তাদের খুঁজে বের করে পুলিশ। তাকে দিয়ে মামলা করতে চাইলে তিনি রাজি হননি। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে হাফিজুর রহমানসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, মামলা করা হয়েছে। এখন প্রধান আসামি হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করতে পারলে ঘটনায় জড়িত অন্যদের ব্যাপারেও জানা যাবে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।