যুক্তরাষ্ট্রে ঘূর্ণিঝড়ের গতিতে বইছে হাওয়া। আর তাতে গতি পাচ্ছে তুষার-তাণ্ডব! প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়টিকে ‘বম্ব সাইক্লোন’ নামে অভিহিত করছেন আবহবিদরা। শনিবার এর সাক্ষী হয়ে রইলেন আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলির কমপক্ষে সাত কোটি বাসিন্দা। যুক্তরাষ্ট্রে গত বেশ কয়েক দিন ধরে একাধিক তুষারঝড়ের পূর্বাভাস ছিলই। পরে ‘ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস’ (এনডব্লিউএস) নিশ্চিত করে, স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ঝোড়ো হওয়া শক্তিবৃদ্ধি করে ‘বম্ব সাইক্লোন’-এ পরিণত হয়েছে।
সঙ্গে ব্যাপক তুষারপাত। আবহবিদদের মতে, বেশ কয়েক বছর পরে এ রকম বরফঝড় দেখল নিউইয়র্ক, বোস্টন এবং পার্শ্ববর্তী শহরগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকুলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রচণ্ড ঝড় ও তুষারপাতে হাজার হাজার বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা। শনিবার নর’ইস্টার নামের এই প্রবল তুষারপাত ও ঝড় শুরুর আগেই পাঁচটি উপকূলীয় অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কিছু এলাকায় আড়াই ফুট পর্যন্ত বরফ জমেছে। শনিবার রাত নাগাদ এই রাজ্যের ৮০ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বোস্টন শহরে শনিবার ২৩ ইঞ্চি পর্যন্ত বরফ পড়েছে – একদিনে এই পরিমাণ বরফ এর আগে মাত্র একবারই পড়েছিল। নিউইয়র্ক শহরে কোন কোন জায়গায় ২ ফুট পর্যন্ত বরফ জমেছে।
ম্যাসাচুসেটস ও নিউইয়র্কে প্রবল তুষার-ঝড়ের সঙ্গে দেখা দেয় উপকুলীয় বন্যা। লোকজনকে ঘরে থাকতে এবং একান্ত বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হলে ‘সারভাইভাল কিট’ অর্থৎ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বেঁচে থাকার সামগ্রী সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে। এ ধরনের ঝড়কে স্থানীয়রা বলেন ‘বম্ব সাইক্লোন।’ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সার্ভিস বলেছেন, এই ঝড়টির সময় ‘বম্বোজেনেসিস’ নামে একটি প্রক্রিয়া ঘটেছে – যার ফলে সমুদ্রের ওপরকার অপেক্ষাকৃত উষ্ণ বাতাসের সঙ্গে ঠাণ্ডা বাতাস মিশে যায় এবং তাতে বায়ুমণ্ডলের চাপ খুব দ্রুত নেমে যায়। শনি ও রোববারে প্রায় ৬ হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়, তবে রোববার ঝড়-তুষারপাত কিছুটা কমে আসে।